দৈনিক শিক্ষাডটকম, শাবিপ্রবি: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা শর্তের চেয়ে কম যোগ্যতার প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষায় (ভাইভা) ডাকার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্বালানি ও খনিজ প্রকৌশল (পিএমই) বিভাগের প্রভাষক পদের নিয়োগ বোর্ডের পরে এই অভিযোগ ওঠে। গত বৃহস্পতিবার পিএমই বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়।
রেজিস্ট্রার দপ্তর ও বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে পিএমই বিভাগে প্রভাষকের ১টি পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পাঁচজন আবেদন করেন। ভাইভা দেন চারজন। তাঁদের মধ্যে মো. তাজবিউল ইসলাম নামের এক প্রার্থী ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইআইইএসটি), শিবপুর থেকে স্নাতক ডিগ্রিধারী। স্নাতকে তিনি সিজিপিএ ৭.৩৫ অর্জন করেন। ভারতের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট সিজিপিএ ১০ পয়েন্টে হিসাব করা হলেও শাবিপ্রবিসহ দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে তা ৪ পয়েন্টের।
আইআইইএসটির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সব বিষয়ে গড়ে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ নম্বরে ১০ পয়েন্ট, ৮০ থেকে শুরু করে ৯০-এর কম শতাংশ নম্বরে ৯ পয়েন্ট, ৭০ থেকে শুরু করে ৮০-এর কম শতাংশ নম্বরে ৮ পয়েন্ট এবং ৬০ থেকে শুরু করে ৭০-এর কম শতাংশ নম্বরে ৭ পয়েন্ট হয়।
অন্যদিকে শাবিপ্রবির সিজিপিএ হিসাবে ৮০ থেকে শুরু হয়ে এর বেশি শতাংশ নম্বরে ৪ পয়েন্ট, ৭৫ থেকে শুরু করে ৮০-এর কম শতাংশ নম্বরে ৩.৭৫ পয়েন্ট, ৭০ থেকে শুরু করে ৭৫-এর কম শতাংশ নম্বরে ৩.৫০ পয়েন্ট এবং ৬৫ থেকে শুরু করে ৭০-এর কম শতাংশ নম্বরে ৩.২৫ পয়েন্ট হয়।
প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আবেদনকারীর যোগ্যতা চাওয়া হয় স্নাতক (সম্মান/ইঞ্জিনিয়ারিং) এবং স্নাতকোত্তরে সিজিপিএ কমপক্ষে ৩.৫০। কিন্তু তাজবিউলের স্নাতকের সিজিপিএ ৭.৩৫কে সিজিপিএ ৪-এ পরিবর্তন করলে তা ৩.৫০-এর চেয়ে কম হয়।
ইউজিসির ‘বিদেশি ডিগ্রির সমতা বিধান নীতিমালা, ২০২০’-এর ৫-এর (ক) অনুযায়ী, স্বীকৃত বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত ডিগ্রি বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রদত্ত অনুরূপ ডিগ্রির সহিত সমতার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
এ বিষয়ে প্রার্থী তাজবিউলের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. জহির বিন আলম বলেন, ‘সে ১০-এ পেয়েছে ৭.৩৫। আমাদের যেটা বলা আছে ৭০ শতাংশের ওপরে, আর ৩.৫০ পয়েন্টের ওপরে হলো ৭০ শতাংশ। এখন এটা যদি ৪-এ কনভার্ট করা হয়, তখন ৩.৫০-এর নিচে চলে যায়। সে যদি চান্স পায়, তাকে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইকুইভ্যালেন্স সার্টিফিকেট আনতে হবে।’
ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ রেজা সেলিম বলেন, ‘আমি তো এ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে পারি না। এ বিষয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান কথা বলতে পারবেন।’
একই ধরনের কথা বলেন পিএমই বিভাগের প্রধান এবং নিয়োগ বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হাওলাদার।
শাবির উপ-উপাচার্য এবং ওই নিয়োগ বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন বলেন, ‘এটা কম সিজিপিএ বলা যাবে না; কারণ, প্রথম কথা হলো বাংলাদেশ, ভারতসহ অন্যান্য দেশের সিজিপিএ এক না। দ্বিতীয় কথা, ইউজিসি ডিগ্রিটা ইকুইভ্যালেন্স কি না দেখে। সিজিপিএ বা ডিগ্রির একেক দেশে ওয়েট একেক রকম।’