ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। চন্ডীপাঠ, ঢাক-ঢোল, কাঁসা আর শঙ্খের আওয়াজে পুরো দেশ যেন উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছে। আগামী ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এ বছর সারা দেশে ৩২ হাজার ৪০৮ মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ বছর ঢাকা মহানগরীতে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে ২৪৫টি মন্দিরে, গত বছর এ সংখ্যাটি ছিল ২৪২টি।
দেশের অন্যান্য জেলার মতো কুড়িগ্রামের চিলমারীতে এবার ৩২টি মন্ডপে দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে। সকালে পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সন্ধ্যায় বোধনের মাধ্যমে দেবীকে জাগিয়ে তোলা হয়। পরে অধিবাস ও আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে দেবীর মুখ উন্মোচিত হয়। লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতীকে নিয়ে মণ্ডপে অধিষ্ঠিত হন দশভূজা দেবী দুর্গা।
এদিকে দুর্গাপূজাকে ঘিরে দেশের অন্যান্য জায়গার মতো কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীতে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জানা যায়, চিলমারীর ৩২ পূজা মণ্ডপে ২১০ জন আনসার সদস্য, ২০ জন পুলিশ সদস্য এবং মোবাইলে টিমে ২০ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
পুরোহিত কমিটির সভাপতি শ্রী মৃনালকান্তি চক্রবর্তী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদযাপনের জন্য কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও প্রতিটি মন্ডপে দায়িত্ব পালন করছেন।
হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি কর্ণধর বর্মা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, উপজেলা জুড়ে এখন সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। সবাই দুর্গাপূজার উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছেন।
চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারেসুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রতিটি মণ্ডপকে ঘিরে ইতোমধ্যেই আমরা বিশেষ নিরাপত্তা গ্রহণ করেছি। এছাড়াও স্ট্রাইকিং ফোর্স ও কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সনাতন শাস্ত্রমতে, শ্বশুরবাড়ি কৈলাস থেকে কন্যারূপে দেবী দুর্গা বাপের বাড়ি বেড়াতে মর্ত্যলোকে আসেন। অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গচ্যুত হয়েছিলেন। এ অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একত্র হন দেবতারা। অসুর শক্তির বিনাশে অনুভূত হলো এক মহাশক্তির আবির্ভাব। দেবতাদের তেজরশ্মি থেকে আবির্ভূত হলেন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। আবির্ভূত হওয়ার পর দেবী দুর্গা আসুরিক শক্তিকে বিনাশ করে ত্রিভুবন রক্ষা করেন। এ কারণে দুর্গা কখনো দুর্গতিনাশিনী, কখনো সংকটনাশিনী। আগামী ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে এ বছরের মতো দেবী দুর্গা বিদায় নেবেন।