সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। এতে প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
বুধবার (১০ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে জড়ো হন। এরপর চারপাশে ব্যারিকেড দিলে এলিফ্যান্ট রোড, ফার্মগেট রোড, টিএসসি এবং মৎসভবন রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় যানজট।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই এ এলাকায় গাড়ি চলাচল কম ছিল। সড়ক বন্ধ করে দেয়ার পর নগরবাসী হেঁটে গন্তেব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। নিরাপত্তার জন্য শাহবাগ এলাকায় পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য অবস্থান করছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি পূরণ না হলে সারা বাংলাদেশ অবরোধ করা হবে। আর যদি কোটা রাখতেই হয় তাহলে ৫ শতাংশের বেশি নয়।
নির্বাহী বিভাগ থেকে কমিশন গঠনের মাধ্যমে কোটা পদ্ধতির স্থায়ী ও যৌক্তিক সমাধান করতে হবে জানিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ আহমেদ বলেন, ‘কোর্টে অর্ডার স্থগিত হলেও আন্দোলন থেকে সরবে না শিক্ষার্থীরা। আমাদের আন্দোলনে জনসমর্থন থাকায় লোকজন কম বের হয়েছে।’
এদিকে, কোটাবিরোধী আন্দোলনে এক দফা দাবিতে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর সাইন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন শত শত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থী। এতে সংশ্লিষ্ট সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে একই দাবিতে টানা সপ্তম দিনের মতো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে দেশের উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল (একাংশ) এর সাথে ঢাকার যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলনে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, সর্বাত্মক ‘বাংলা ব্লকেড’ অনুযায়ী সারা দিন দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থান অবরোধ করা হবে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের পাশাপাশি হাইওয়ে এবং রেলপথও এ কর্মসূচির আওতায় থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করছি। এ আন্দোলনের ফলে জনসাধারণের যে ভোগান্তি হচ্ছে, তার প্রতি আমরা সংবেদনশীল। কিন্তু এর দায়ভার সরকারকে বহন করতে হবে। কারণ এতদিনের আন্দোলনের পরও তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ কিংবা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেনি। আমরা চূড়ান্ত সমাধান চাই।’
এদিকে, রাজধানীর শাহবাগে ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কটূক্তির প্রতিবাদে’ বিক্ষোভ সমাবেশ করছ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, প্রজন্ম ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির সব সংগঠন।