মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ শাখার পরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে পাঁচ সদস্যের শক্তিশালী কমিটি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ মো. আজমতগীরকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে একই অধিদপ্তরের চারজন পরিদর্শক, সহকারী পরিদর্শক ও অডিট অফিসারকে রাখা হয়েছে। কমিটি আগামী ৭ থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। অধিদপ্তরের এক চিঠিতে এই তথ্য জানা গেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবিরের বিরুদ্ধে আনীত নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করা হবে।’
দৈনিক আমাদের বার্তার এক প্রশ্নের জবাবে অলিউল্লাহ মো; আজমতগীর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘গত ৯ সেপ্টেম্বর দৈনিক আমাদের বার্তায় প্রকাশিত ‘শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঁচ শতাধিক প্রদর্শক নিয়োগে টাকার খেলা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আনীত অভিযোগগুলো তদন্ত করতে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ। এর বেশি কিছু বলা যাবে না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, কমিটি গঠনের খবর পেয়ে বৃহস্পতিবারই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে দেখা করেছেন শিক্ষা ক্যাডারের কয়েকজন ‘দাগী’ ও কুখ্যাত বাড়ৈ সিন্ডিকেটের সদস্য। তারা এই তদন্ত কমিটিতে নিজেদের পছন্দের ‘লোক’ দেওয়ার আবদার করেছেন। আজমতগীরকে সরিয়ে দেওয়ার আবদার করেছেন তারা।
জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সরকারি কলেজের জন্য দশটি বিষয়ে পাঁচ শতাধিক প্রদর্শক নিয়োগে মোটা অংকের টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ প্রশাসন শাখার পরিচালক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরীর বিরুদ্ধে। দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে শিক্ষা প্রশাসন৷ প্রতিবেদনগুলোতে শাহেদুল খবিরের অন্যান্য অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন : শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঁচ শতাধিক প্রদর্শক নিয়োগে টাকার খেলা
ডিআইএ থেকে জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, এ অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর আলিউল্লাহ্ মোঃ আজমতণীর আগামী ৭ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী এবং উপপরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আনীত নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করবেন। এ অধিদপ্তরের শিক্ষা পরিদর্শক টুটুল কুমার নাগ, ড. এনামুল হক, সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক মনিরুজ্জামান এবং অডিট অফিসার সুলতান আহম্মদ তদন্ত কাজে সহায়তা করবেন।
জানা যায়, বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর অনেক পরে বর্তমান পদে যোগদান করেছেন। পদে থাকার কারণে তিনিও তদন্তের আওতাধীন। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে জানা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, নিয়োগ বাণিজ্যে যুক্ত ছিলেন অভিযোগের কারণে সদ্য বদলি হওয়া উপপরিচালক রুহুল মমিন। রুহুলের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ সবার মুখে মুখে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর দৈনিক আমাদের বার্তায় 'প্রদর্শক নিয়োগে টাকার খেলা' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সরকারি কলেজের জন্য দশটি বিষয়ে মোট ৫১৪ জন প্রদর্শক নিয়োগে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি সিন্ডিকেট প্রার্থীদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ লাখ করে টাকা তুলছে। ঢাকা বোর্ডে এ নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঢাকা শিক্ষাবোর্ডর অফিসার্স কোয়ার্টার্সে অবৈধভাবে বসবাস করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একজন পরিচালক নিয়োগ পরীক্ষার ফলকে প্রভাবিত করেছেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।