শিক্ষক-কর্মচারী সবই আছে বিদ্যালয়ে, নেই শুধু শিক্ষার্থী

দৈনিক শিক্ষাডটকম, জামালপুর |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, জামালপুর : জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের চাপারকোনা মনিজা আবুল মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারী, আছে অবকাঠামো, চেয়ার-টেবিল ও শিক্ষাসামগ্রী। শুধু নেই কোনো শিক্ষার্থী। তবে বিভিন্ন শ্রেণির হাজিরা খাতায় রয়েছে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি।

সরেজমিনে দেখা যায়, এ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী নেই। কিন্তু হাজিরা খাতায় শিক্ষকরা নিয়মিত শিক্ষার্থী উপস্থিতি দেখিয়ে আসছেন। অন্যদিকে নেই শিক্ষক হাজিরা খাতা। পড়ে থেকে শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চগুলোতে জমেছে ধুলোর স্তর। প্রধান শিক্ষকের অফিসও শূন্য। বিদ্যালয়ের মাঠে চেয়ারে বসে খোশ গল্প করছেন শিক্ষকরা। সঙ্গে আছেন পিয়নও। কজন শিক্ষক আবার গিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসে।

স্থানীয় অভিভাবক হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের বাড়ির পাশেই বিদ্যালয়টি। এ স্কুলে শিক্ষার্থীও নেই, লেখাপড়াও নেই। শিক্ষকেরা সারা বছর স্কুলে এসে আড্ডা মারেন। দুপুর পেরোতে না পেরোতেই ছুটি। ২/১ ছাত্রী স্কুলে এলেও কিছুক্ষণ থেকেই চলে যায়। তাই আমার মেয়েকে অন্য স্কুলে ভর্তি করিয়েছি। আরেক অভিভাবক হাছেন আলী বলেন, স্কুলের শিক্ষকরা প্রতিদিন স্কুলে এলেও ক্লাস নেন না। আর যে ২/৪ জন ছাত্রী স্কুলে আসে, তারাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। 

  

বিদ্যালয়ের জমিদাতা মৃত খোশ মাহমুদ মন্ডলের ছেলে সারোয়ার আলম বলেন, আমরা এক বিঘা জমি দান করেছি এবং অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়টি করেছি। আজ সেই স্কুলের বেহাল দশা। এ বছর একটা ছাত্রীও ভর্তি হয়নি। আর এর জন্য  প্রধান শিক্ষিকা,ম্যানেজিং কমিটি ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকেই দায়ী করবো। 

বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক আবু সাঈদ বলেন, ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষানুরাগী নিজস্ব জমি ও অর্থ দিয়ে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়ে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে এখানে ৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী আছে। তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নাই বললেই চলে। আরেক শিক্ষক বলেন, প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্তির পরপরই  শিক্ষকদের মাঝে অনিয়ম ও অনুপস্থিতি শুরু হয়। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক কিছুই বলেন না, আর সভাপতি তো খোঁজই রাখেন না। 

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জগুরুল ইসলাম মানিক বলেন, বিদ্যালয়ের ভালোমন্দ দেখভাল করার দায়িত্ব শিক্ষকদেরও আছে। এটা দেখার দায়িত্ব মূলত প্রধান শিক্ষকের। তবে বিষয়টি আমি জানলাম, দেখবো।   

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আজমেরি বেগম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো মিথ্যা। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি খুবই কম। এটি উন্নত করার চেষ্টা করবো। 
সরিষাবাড়ি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোজাম্মেল হক বলেন, ওই বিদ্যালয় নিয়ে আমার জানা নাই। খোঁজ নিয়ে দেখি কি করা যায়।  

সরিষাবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে দেখবো। অভিযোগ সত্য প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।   


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশ-দ্বাদশ বাংলা-ইংরেজির সিলেবাস প্রকাশ - dainik shiksha একাদশ-দ্বাদশ বাংলা-ইংরেজির সিলেবাস প্রকাশ ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঠুঁটো জগন্নাথ অধ্যাপকের পকেটে ৬০ লাখ টাকা - dainik shiksha ঠুঁটো জগন্নাথ অধ্যাপকের পকেটে ৬০ লাখ টাকা সব কয়টারে গু*লি কইরা মা*রমু - dainik shiksha সব কয়টারে গু*লি কইরা মা*রমু স্কুলে ভর্তি: সরকারিতে জোয়ার, বেসরকারিতে ভাটা - dainik shiksha স্কুলে ভর্তি: সরকারিতে জোয়ার, বেসরকারিতে ভাটা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবি যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা - dainik shiksha স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবি যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003587007522583