দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: বর্তমানে উচ্চশিক্ষা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছে এবং সদা পরিবর্তনশীল শিক্ষাব্যবস্থায় উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি (বিএসএমআরএমইউ), বাংলাদেশ-এর নবনিযুক্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএসএমআরএমইউ’র নবনিযুক্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ২০ দিনের ফাউন্ডেশন কোর্সের অংশ হিসেবে ইউজিসি অডিটোরিয়ামে আজ রোববার এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমআরএমই’র ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের পরিচালক ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ মোশাররফ হেসেন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রফেশনাল ল্যাংগুয়েজ ইনস্টিটিউট এর শিক্ষক তাসরীফ পারভীন সুইটি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর আলমগীর বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে গতানুগতিক কাজের ৫০ শতাংশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সম্পন্ন হবে। উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন জলবল তৈরি করা না গেলে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেকারত্বের হার বাড়বে। তাই, শিক্ষকদের যুগের চাহিদা অনুধাবন করতে হবে এবং ভবিষ্যত শ্রমবাজারের চাহিদা উপযোগী জনবল গড়ে তুলতে বর্তমান উচ্চশিক্ষার পাঠ্যক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মুক্ত চিন্তার স্থান। নতুন ধারণা সৃষ্টির মাধ্যমে মুক্ত চিন্তার চর্চাকে উৎসাহিত করতে শিক্ষকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে শিক্ষক প্রশিক্ষণ একাডেমি গড়ে তোলার কাজ চলমান রয়েছে এবং খুব শিগগির প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে তিনি জানান।
প্রফেসর আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্র অনেক বড়। বর্তমানে ৬১টি পাবলিক ও ১১৫টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৮ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে। শিক্ষার্থীর এ সংখ্যা অনেক দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। তাই বর্তমানে গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করাই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে ‘হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট)’ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
৪ হাজার ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকার এ প্রকল্পে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা প্রতিযোগিতামূলকভাবে উচ্চাশিক্ষায় উদ্ভাবন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজে ব্যয় করা হবে বলে তিনি জানান।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, বিভিন্ন খাতে দক্ষ জনবল তৈরি করতে বর্তমান সরকার অনেকগুলো বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি (বিএসএমআরএমইউ) এর মধ্যে অন্যতম। দেশের সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করতে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে সক্ষম হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মতবিনিময় সভায় বিএসএমআরএমই’র ২১ জন নবনিযুক্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তা অংশ নেন।