শিক্ষক নিবন্ধন : ফল প্রকাশে বিলম্ব বাড়ছেই

রুম্মান তূর্য |

১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেছে প্রায় এক মাস আগে। তবে এখনো সব খাতা ও ওএমআর এসে পৌঁছায়নি বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কার্যালয়ে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার খাতা এনটিআরসিএ কার্যালয়ে পৌঁছানো বাকি রয়েছে বলেও দৈনিক আমাদের বার্তাকে নিশ্চিত করেছে সূত্র। ১ লাখ ৪ হাজারের বেশি প্রার্থী ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।

 

গত ৫ ও ৬ মে এর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়নের সংশোধিত বিধিমালা অনুযায়ী, ৬০ দিনের মধ্যে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হতো। গত ৫ জুলাই সে ৬০ দিন পূর্ণ হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, পরীক্ষকরা ঠিক সময়ে খাতা দেখে জমা না দেয়ায় সে লক্ষ ঠিক রাখা সম্ভব হয়নি। এদিকে আগস্ট মাসের শুরুতে ফল প্রকাশের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিলো। তবে সে লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে কি না তা নিয়েও শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। 

জানতে চাইলে এনটিআরসিএর পরীক্ষা ও মূল্যায়ন শাখার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সদস্য এস এম মাসুদুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমাদের সব খাতা এসে পৌঁছায়নি। খাতা পৌঁছালে হয়তো ফল প্রক্রিয়ায় ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগবে। তবে আমরা দ্রুততম সময়ে ফল প্রকাশ করতে চাচ্ছি। সব খাতা এসে পৌঁছালে হয়তো দ্রুত কাজ শুরু করা যাবে। দ্রুত ফল প্রকাশের জন্য আমাদের কর্মকর্তারা পরীক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত খাতাগুলো আনার চেষ্টা করছেন। তবে, কবে নাগাদ ফল প্রকাশ হবে সে বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কোনো মন্তব্য করতে চাননি এ কর্মকর্তা। 

ফল প্রকাশের বিষয়ে জানতে চাইলে পরীক্ষা ও মূল্যায়ন শাখার পরিচালক মো. আবদুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, খাতা পেলে ওএমআর শিট স্ক্যান শুরু হবে। আমাদের সিস্টেম অ্যানালিস্ট নতুন যোগদান করেছেন। তিনি এ বিষয়টির সঙ্গে তেমনভাবে পরিচিতও নন। তাকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। তিনি সম্প্রতি ঢাকা বোর্ড থেকে ওএমআর সিট স্ক্যানিংয়ের বিষয়ে ধারণা নিয়ে এসেছেন। আমরা চাচ্ছি দ্রুতই ফল প্রকাশ করতে। পরীক্ষকদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করে খাতা দিতে বলা হচ্ছে। হয়তো তারাও কোনো কাজে আটকে গিয়েছেন। তবে, কবে নাগাদ ফল প্রকাশ হবে সে বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কোনো মন্তব্য করতে চাননি পরিচালকও।  

৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের বিধানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে আমাদেরও অন্যান্যদের সহযোগিতা নিয়ে কাজগুলো করতে হয়। তাই কোনো কিছুই শুধু এনটিআরসিএর ওপর নির্ভর করে না। অন্যান্যদের কারণেও অনেক সময় যথাসময় কাজ শেষ করা সম্ভব হয় না।
 
এদিকে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়া প্রার্থীরা দ্রুত ফল পেয়ে ভাইভায় বসতে চাচ্ছেন। তারা দ্রুত নিবন্ধিত হয়ে শিক্ষক হতে চাচ্ছেন। এদিকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও শিক্ষক সংকট চরমে। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচিত প্রার্থীরা যোগাদন করলেও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় অর্ধলক্ষ শিক্ষক পদ শূন্য থাকবে। ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শেষ হলে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তির কাজ শুরু করতে চায় এনটিআরসিএ। তাই শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রত্যাশী নিবন্ধিত প্রার্থীদের নজরও ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের দিকে। অপরদিকে, এ নিবন্ধন প্রক্রিয়ার পর নতুন বা ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হবে। গত সাড়ে তিন বছরে নতুন করে শিক্ষক নিবন্ধন প্রক্রিয়াও শুরু হয়নি। তাই শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে সদ্য গ্র্যাজুয়েটরাও অপেক্ষায় আছেন ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার। 

জানা গেছে, এর আগেও বিধিমালা মেনে নির্ধারিত সময়ে ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়নি। করোনা মহামরির থাবায় সব স্থবির হয়ে যাওয়ায় লিখিত পরীক্ষার এক বছর পর ফল প্রকাশ করা হয়েছিলো।

গত ৫ ও ৬ মে শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজারের বেশি প্রার্থী। গত ৫ মে অনুষ্ঠিত স্কুল ও স্কুল পর্যায়-২ এর লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৫৭ হাজার ২৭৪ জন। আর ৬ মে অনুষ্ঠিত কলেজ পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৪৭ হাজার ৫৬০ জন। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারিতে (করোনা মহামারি শুরুর আগে) ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিলো।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল   SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026049613952637