দৈনিকশিক্ষাডটকম, ময়মনসিংহ: ধুরুয়া ডি.এস দাখিল মাদরাসায় শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভাইরাল হয়েছে। অডিও রেকর্ডে ওই মাদরাসার সুপার তাজুল ইসলাম, সভাপতি আব্দুল কাদির ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য আলমের মধ্যে নিয়োগ বাণিজ্যের ১৩ লাখ টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের কথোপকথন রয়েছে। অডিও ছড়িয়ে পড়ায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিলের পর নান্দাইল উপজেলার ৪নং চন্ডিপাশা ইউনিয়নের ধূরুয়া ডি.এস দাখিল মাদরাসায় একজন নিরাপত্তা কর্মী, একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও একজন আয়া পদে মোট তিনটি নিয়োগ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যদিও সংসদীয় নির্বাচন তপশিলের পর কোনো নিয়োগ কার্যক্রম বা নিয়োগ পরীক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, তথাপিও অসৎ উদ্দেশে তড়িঘড়ি করে অত্র মাদ্রাসার সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা মোটা অংকের টাকার ঘুষের মাধ্যমে তিনটি নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে।
ভাইরাল হওয়া অডিও কথোপকথনে জানা যায়, মাদরাসার সভাপতি আব্দুল কাদির উক্ত নিয়োগ বাণিজ্যের টাকার ভাগ হিসেবে ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যকে ৩ লাখ টাকার প্রস্তাব দেয়। তবে ওই প্রস্তাবে সদস্যরা রাজি না হওয়ায় বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। একপর্যায়ে বিদ্যোৎসাহী সদস্য আলম মাদ্রাসার সভাপতি ও সুপারের সাথে বাগতিণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এখানে আলমকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে বলে সভাপতি আব্দুল কাদির জানিয়েছেন।
ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যোৎসাহী সদস্য আলম বলেন, অডিও রেকর্ডে যা আছে তা সবই সত্য। আমি বিদ্যোৎসাহী সদস্য। আমাদের স্বাক্ষর ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর সুপার ও সভাপতি মিলে টাকা ভাগাভাগি করে নিয়েছে। সুপার তার আপন ভাগ্নীকে আয়া পদে নিয়োগ দিয়েছে।
মাদরাসার সুপার উক্ত কথোপকথনে ঘুষের টাকার বিষয়ে স্বীকার করে বলেন- এগুলো আমি নেইনি, মাদরাসা সভাপতি নিয়েছে। উনার সাথে সমঝোতা করেন।
এ বিষয়ে অত্র মাদরাসার সভাপতি আব্দুল কাদির বলেন, এসব টাকা-পয়সা আমি নেইনি, সুপার নিয়েছে। অডিও রেকর্ডে তো সবই আছে। আমি আর কিছু বলতে চাই না।
অপরদিকে মাদরাসার সুপার তাজুল ইসলাম বলেন, সভাপতির নির্দেশক্রমে সবকিছু হইছে। এসব লেখালেখি করে কি অইবো? যা হবার তো হইছেই।
নান্দাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, সবকিছু নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। লেনদেনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন, অডিও রেকর্ডটি আমি শুনেছি। বিষয়টি আমি দেখব।