জাতীয় মেধাতালিকায় এগিয়ে থাকলেও ইনডেক্সধারী প্রার্থীদের নিবন্ধন সনদের রোল নম্বরে মিল থাকায় চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক পদে সুপারিশ পাননি বলে অভিযোগ তুলেছেন কয়েকজন প্রার্থী। তাদের অভিযোগ, আলাদা ব্যাচের হলেও আগে শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশ পাওয়া ইনডেক্সধারী প্রার্থীদের সঙ্গে তাদের রোল নম্বরে মিল ছিলো। কিন্তু শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে তথ্য গোপন করে আবেদন করা ইনডেক্সধারী প্রার্থীদের সুপারিশ করা ঠেকাতে তাদের রোল নম্বরগুলো ব্লক করে দেয়া হয়। তাই, আলাদা ব্যাচের কিন্তু একই রোল নম্বরের নিবন্ধন সনদধারী বেকার প্রার্থীরা সুপারিশ পাননি বলে অভিযোগ তুলেছেন।
প্রাথমিকভাবে ২৭ জন সুপারিশ না পাওয়া প্রার্থী এ অভিযোগ তুলেছেন। তাদের ২৩ জন গতকাল রোববার বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগটির বিষয়ে ইতোমধ্যে জানতে পেরেছে এনটিআরসিএ। কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানী ইস্কাটনে এনটিআরসিএর কার্যালয়ের সামনে দৈনিক শিক্ষাডটকমের সঙ্গে কথা হয় ১২তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থী মো. মামুন অর রশিদের। তিনি বলেন, আমি কলেজ পর্যায়ে রসায়ন বিষয়ের প্রভাষক পদে নিবন্ধিত। ১২তম নিবন্ধন, রোল ৪১৩০১৪২৫, জাতীয় মেধাতালিকায় অবস্থান ১৯৫। জাতীয় মেধাতালিকার ভালো অবস্থানে থাকায় আশা নিয়ে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু সুপারিশ পাইনি। দেখলাম মেধা তালিকায় পেছনে থাকা প্রার্থীরা সুপারিশ পেয়েছেন। পরে এ বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করি। এবার ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ না দেয়া হলেও অনেকে তথ্য গোপন করে আবেদন করেছেন। তাদের রোল নম্বর ব্লক করেছিলো এনটিআরসিএ। দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে আমার একই রোল নম্বরধারী (রোল ৪১৩০১৪২৫) এক প্রার্থী সুপারিশ নিয়ে এমপিওভুক্ত হয়েছেন। উনি ১৪তম নিবন্ধনে উত্তীর্ণ। আলাদা ব্যাচ হলেও রোল নম্বর এক। ওই প্রার্থীর রোল নম্বর ব্লক করায় আলাদা ব্যাচের হলেও আমার রোল ব্লক হয়ে গেছে। এ কারণে মেধাতালিকায় পিছিয়ে থাকা প্রার্থীরা নিয়োগ সুপারিশ পেলেও আমি পাইনি। মো. মামুন অর রশিদের দাবি, এনটিআরসিএর কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।
একই ধরনের অভিযোগ করেছেন ১৪তম নিবন্ধনে স্কুল পর্যায়ে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে নিবন্ধিত মো. আনিছুর রহমান, ১০ম নিবন্ধনে ইংরেজি বিষয়ে স্কুল পর্যায়ে নিবন্ধিত মো. সানাউল্লাহ ও আবুল হাশেম, ১২ তম নিবন্ধনে কলেজ পর্যায়ে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে নিবন্ধিত রোকসানা পারভীনসহ ২৭ জন প্রার্থী।
তাদের ভাষ্য, এনটিআরসিএর অটোমেটিক সফটওয়্যার সিস্টেমের মাধ্যমে স্বচ্ছ নির্বাচন পদ্ধতির পরও নির্বাচিত না হতে দেখে ভেবে নেই রোল কোনো কারণে ব্লক করা হয়েছে। তখন জাতীয় মেরিট লিস্ট সার্চ করতে গিয়ে দেখতে পাই, ব্যাচ ও নাম আলাদা হলেও জাতীয় মেরিট লিস্টে আমাদের রোলের মতো একাধিক রোল রয়েছে। সেই রোলের কোনো একজন ব্যক্তি ম্যানেজিং কমিটি বা এনটিআরসিএর কোনো একটি গণবিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচিত হয়ে যোগদান করেছে এবং ইনডেক্স প্রাপ্ত হয়েছে অথবা কারও ক্ষেত্রে বয়স এনটিআরসিএ নির্ধারিত বয়সসীমা অতিক্রম করেছে। সেই রোল ব্লক করায়, দূর্ভাগাক্রমে আমাদের রোলটিও ব্লক হয়েছে। তাই আমাদের নির্বাচিত না করে আমাদের চেয়ে মেরিট ও সিরিয়ালে পিছিয়ে থাকা প্রার্থীদের সুপারিশ করা হয়েছে বলে আমরা মনে করছি। আমাদের যোগ্যতা অনুযায়ী চয়েজ লিস্টের প্রতিষ্ঠানে পুলিশ ভেরিফিকেশনের আগে প্রাথমিক সুপারিশ করা হোক।
গতকাল রোববার রাতে এনটিআরসিএর সংশ্লিষ্ট শাখার এক কর্মকর্তার সঙ্গে মুঠোফোনে এ বিষয়ে কথা হয় দৈনিক শিক্ষাডটকমের। প্রার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তবে, নিয়োগ সুপারিশে কোনো ত্রুটি হয়েছে কি-না জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।