শিক্ষক নিয়োগ: তিন মাস পর পর শূন্যপদের চাহিদা সংগ্রহ

রুম্মান তূর্য |

নিয়োগের আগে শুধু একবার নয় এখন থেকে তিন মাস পর পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এন্ট্রিলেভেলের শিক্ষক শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এজন্য এনটিআরসিএকে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব দিয়ে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর জারি করা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র সংশোধনের উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। ওই পরিপত্রে বছরে একবার শূন্যপদের চাহিদা দেয়ার কথা বলা ছিলো।

গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ওই পরিপত্র সংশোধন নিয়ে আয়োজিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় অংশ নেয়া শিক্ষা প্রশাসনের একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর যে পরিপত্রে এনটিআরসিএকে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো, ওই পরিপত্র বছরে একবার শিক্ষক শূন্যপদের চাহিদা দেয়ার কথা উল্লেখ ছিলো। সে বিষয়টি  উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। সভায় এমনটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, যোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে এনটিআরসিএর সচিব মো. ওবায়দুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ওই পরিপত্র সংশোধন করে দেয়া হলে আমরা তিন মাস পর পর শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করবো। সে অনুযায়ী সুযোগ বুঝে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করা হবে।

জানা গেছে, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর জারি করা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র সংশোধনের সভাটি গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। সময় পরিবর্তন করে বৃহস্পতিবার দুপুরে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।

বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্তমানে অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে। শিক্ষক সংকট নিয়েই বাস্তবায়ন হওয়া ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাশাপাশি আগামী বছর অষ্টম ও নবমের ক্লাস নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী নিতে হবে। তাই প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে সর্বশেষ বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। চতুর্থ ধাপে শিক্ষক যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, ৬৮ হাজার পদ শূন্য। এমপিও প্রাপ্য এসব এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশ করতে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে এনটিআরসিএ। কিন্তু মাত্র সাড়ে ৩২ হাজার পদে প্রার্থী নির্বাচন করা যায়। যেখান থেকে মাত্র ২৭ হাজার নতুন শিক্ষককে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষাংশে চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়। যাদের কেউ যোগ দিচ্ছেন, কেউ দিচ্ছেন না। নতুন শিক্ষকরা সবাই যোগদান করলেও ৪১ হাজারের বেশি শিক্ষক পদ শূন্যই থাকছে। এসবের সঙ্গে যোগ হবে ২০২২ এর অক্টোবর থেকে ২০২৩ এর অক্টোবর পর্যন্ত গত এক বছরে অবসরজনিত কারণে শুন্য হওয়া শিক্ষক পদ। এ হিসাবে ৩৫ হাজার এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্ধলক্ষাধিক পদ এখনো শূন্য। 

বিষয়টি নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর দেশের শিক্ষা বিষয়ক জাতীয় পত্রিক দৈনিক আমাদের বার্তায় ‘এখনো অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষক ঘাটতি’ শিরোনামে এবং শিক্ষা বিষয়ক ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকমে ‘৬০ হাজার শিক্ষক পদ শূন্য: আরো দুই শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিলো।

এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা বলছেন, বছরে একবার শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করার ফলে বেসরকারি শিক্ষক শূন্যপদ জমে যাচ্ছে। ফলে শিক্ষক সংকট কাটানো সম্ভব হচ্ছে না। তিন মাস পর পর চাহিদা সংগ্রহ করা হলে গত কয়েকবছর ধরে চলা শিক্ষক সংকট কাটানো সম্ভব হবে।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্ব এনটিআরসিএকে দিয়ে ও নিয়োগের অনুসরণীয় পদ্ধতি নির্ধারণ করে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর জারি করা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে প্রতিবছর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষক নিয়োগযোগ্য পদের চাহিদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেয়ার কথা বলা হয়েছিলো। যেখানে জেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে প্রতি বছর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এনটিআরসিএতে পাঠানোর নির্দেশনা ছিলো।

 

 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0022509098052979