শিক্ষক নিয়োগের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ৩২ হাজার ৪৩৮ জন প্রার্থীকে নিয়োগ সুপারিশ করা হয়েছে। এসব প্রার্থীকে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। তবে, এ নিয়োগ সুপারিশ প্রক্রিয়া নিয়ে কিছু অভিযোগ তুলেছেন প্রার্থীরা। নিয়োগ সুপারিশ না পাওয়া বেকার প্রার্থীদের কেউ কেউ বলছেন, ব্যাচ উল্লেখ করে ইনডেক্সধারী প্রার্থীদের রোল নম্বর ব্লক করায় আলাদা ব্যাচের একই রোল নম্বরধারীরা নিয়োগ সুপারিশ পাননি। আবার প্রদর্শক পদে আবেদন করে প্রার্থীদের কেউ কেউ সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছেন। প্রার্থীদের করা এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। তবে, তাদের সমস্য কিভাবে সমাধান করা হবে এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার এনটিআরসিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সচিব মো. ওবায়দুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, প্রার্থীরা বিভিন্ন অভিযোগ তুলছেন। সেগুলো আমরা যাচাই বাছাই করবো। আমরা তাদের তথ্য সংগ্রহ করছি। তথ্য সংগ্রহের পর যাচাই করে দেখা হবে তাদের দাবি সঠিক কি-না।
এসব প্রার্থীর জটিলতা কিভাবে সমাধান করা হবে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমরা প্রার্থীদের অভিযোগ যাচাই করে দেখবো। তবে, কিভাবে তাদের সমস্য সমাধান হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যাচাইয়ে প্রার্থীদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতনদের জানাবো। তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
তিনি বলেন, আমরা প্রার্থীদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েছি। তাদের অভিযোগ জানিয়ে আবেদন জমা দিতে বলেছি। তাদের কিভাবে কি কি তথ্য দিয়ে অভিযোগ দিতে হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
এনটিআরসিএর কার্যালয়ের সামনে দৈনিক আমাদের বার্তার সঙ্গে কথা হয় প্রদর্শক সনদ নিয়ে সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশ পাওয়া প্রার্থী জয়নাল আবেদিনের। জয়নাল জানান, জীববিজ্ঞান বিষয়ে প্রদর্শক পদে শিক্ষক নিবন্ধন করলেও তিনি নিজ উপজেলা নাটোরের লালপুরের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জীববিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশ পেয়েছেন।
তিনি দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমার আমাদের অভিযোগগুলো জানিয়ে এনটিআরসিএকে আবেদন দিচ্ছি। কর্মকর্তারা আমাদের আবেদন দেয়ার ক্ষেত্রে পরামর্শ দিচ্ছেন। কি কি তথ্য অন্তর্ভুক্ত করে আবেদন দিতে হবে সেগুলো জানাচ্ছেন। আমরা অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কিভাবে সমাধান হবে তা জানি না।
জায়নাল আবেদিন আক্ষেপ করে বলেন, হয়তো পছন্দের পদে সুপারিশ পেতাম যদি ভুল না হতো। এখন তারা একজন প্রার্থীকে সুপারিশ করেছে, তাকে কি বাতিল করতে পারবে? আমিও কি আমার কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানের সুপারিশ পেতে পারবো? সব কিছুই অনিশ্চিত হয়ে গেছে।
জাতীয় মেধাতালিকায় এগিয়ে থাকলেও ইনডেক্সধারী প্রার্থীদের নিবন্ধন সনদের রোল নম্বরে মিল থাকায় চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক পদে সুপারিশ পাননি বলে অভিযোগ তুলেছেন কয়েকজন প্রার্থী। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ অভিযোগ তোলা প্রার্থীদের একজন মো. আনিছুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমরা অভিযোগের বিষয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন লিখিত অভিযোগ দিতে। তা দেয়া হয়েছে। একজন কর্মকর্তা মুঠোফোনে যোগাযোগ করে আমার রোল, ব্যাচ, বিষয় এসব তথ্য ঠিক আছে কি-না জানতে চেয়েছিলেন। আমাদের জটিলতা কিভাবে সমাধান হবে তা জানি না। তবে, আমরা চাই মেধারভিত্তিতে আমাদের চয়েজ দেয়া প্রতিষ্ঠানেই আমাদের নিয়োগ সুপারিশ করা হোক।