দৈনিকশিক্ষাডটকম, নেত্রকোণা : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোণার কলমাকান্দায় অধ্যাপক আবু তাহের খান কলেজের (কারিগরি) প্রভাষক পরিচয়ে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী নাঈম মিয়া। তিনি নেত্রকোণা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং জেলার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ধলপুর গ্রামের বাসিন্দা। গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি কলমাকান্দার পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবু তাহের কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ ১৪ জন শিক্ষকের নামের তালিকা পাঠান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। এ তালিকায় কয়েকজন নিয়মিত শিক্ষক থাকলেও বাকিরা ছিলেন খণ্ডকালীন। তারা একইভাবে বিভিন্ন কেন্দ্রে একই পদে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন। নাঈম মিয়া তাদেরই একজন।
জানা যায়, অধ্যাপক আবু তাহের খান কলেজটি কলমাকান্দার কৈলাটী ইউনিয়ন বেলতলী গ্রামে অবস্থিত। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবু তাহের খান বর্তমানে নেত্রকোণা সরকারি কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত। এ কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম আব্দুল হামিদ। তিনি নেত্রকোনা সরকারি কলেজের (অর্থনীতি বিভাগ) অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।
কলমাকান্দা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ ধরনের তালিকা পাঠিয়ে ঠিক করেননি অধ্যক্ষ মহোদয়। বিষয়টি জানার পর অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে কারিগরি ওই কলেজটি এমপিওভুক্ত না। শিক্ষার্থীর নাম কীভাবে তালিকায় দেয়া হয়েছে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মহোদয়ের কাছে জানতে চেয়েছি। তিনি এখানো আমাকে জানাননি।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানাতে ওই কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম আব্দুল হামিদ ও প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবু তাহের খানের সঙ্গে যোগাযোগ চেষ্টা করেও সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি। একাধিকবার তাদের মুঠোফোনে কল দিলেও তারা ধরেননি। নাঈম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
কলমাকান্দার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, তালিকা চেয়েছি অধ্যক্ষ তালিকা দেন। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছি ওই শিক্ষার্থী আইসিটির (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) খণ্ডকালীন শিক্ষকও। এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। ভবিষ্যতে কলেজটি সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, একজন শিক্ষার্থীকে শিক্ষক বানানোর সুযোগ নাই। অধ্যক্ষ করে থাকলে ভুল করেছেন। এটা যদি সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট হয় তাহলে আইনের আওতায় আসবেন।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।