শিক্ষক সংকটে জবির বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগ

জবি প্রতিনিধি |

চরম শিক্ষক সংকট বিরাজ করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ এন্ড আর্থ সাইন্স অনুষদের 'বায়োকেমেস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি’ বিভাগে। শিক্ষক সংকটের মাঝে কিছুটা জটের সাথে নানামুখী ভোগান্তিতে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সরকারি আদেশ ও চাকরির বাজারে চাহিদা রয়েছে বিবেচনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ৩৮তম জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলে তিনটি নতুন বিভাগ চালুর সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। সেই অনুযায়ী ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে নতুন এই তিন বিভাগের একটি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় ‘বায়োকেমেস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি’ বিভাগ। 

পর্যাপ্ত শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা না নিয়েই ভর্তি করা হয় শিক্ষার্থীদের। তখন ঐ অবস্থায় কোনো পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই নতুন বিভাগ খোলা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে দুদিকেই মত দিয়েছিলেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। কেউ বলেছেন এভাবে শুরু করা উচিত হয়নি আবার কেউ বলছেন, কিছু পেতে হলে কিছুটা ত্যাগ স্বীকার করতেই হয়, তাই এটা নেগেটিভলি নেওয়ার কিছু নেই!

কিন্তু বর্তমান সময়ে বিভাগে প্রতি ব্যাচে ৩৫জন শিক্ষার্থী নিয়ে সাতটি ব্যাচ চলমান অবস্থায় রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০০ এর কাছাকাছি। অথচ বর্তমানে কর্মরত শিক্ষক আছেন কেবল চার জন। আছেন একজন অধ্যাপক, একজন সহযোগী অধ্যাপক আর ২ জন প্রভাষক। শিক্ষাছুটি ছাড়াও আরো একজন আছে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে।

বিশ্বব্যাপী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গড় অনুপাতের ন্যূনতম মানদণ্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে শিক্ষক থাকতে হবে। কিন্তু জবির বায়োকেমেস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগে সেই অনুপাত দাড়িয়েছে ১:৪০ এর মতো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের তুলনায় পুরো এক সেমিস্টার পিছিয়ে না পরলেও আছে গভীর শিক্ষাজট। এতে শিক্ষার্থীদের পোহাতে হচ্ছে বাড়তি মানসিক চাপ।

এ বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. লাইসা আহমদ লিসা বলেন, "আমাদের ৭টি ব্যাচ চলমান। নতুন বিভাগ হিসেবে আমরা এখন অনেকটাই এগিয়ে আছি। ২/৩ মাসের জট থাকতে পারে। তবে করোনা না হলে এ সমস্যাটাও হতো না। শিক্ষক সংকট তো আছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পদ না আসলে তো নিয়োগ দেওয়া যায় না। ইউজিসি থেকে শিক্ষা ছুটির বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়াটি বন্ধ করে দেওয়ায় বিভাগে চার জন শিক্ষক শিক্ষাছুটিতে থাকাকালীন নিয়োগ হচ্ছে না। তবে শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে আমরা চার জন শিক্ষক পুরোদমে চেষ্টা করছি।"

বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপকের অধীনে থিসিস করতে হয়। যেখানে বিভাগে কেবল একজন অধ্যাপক ও একজন সহযোগী অধ্যাপক থাকায় সেখানে শিক্ষার্থীদের থিসিসের কাজে বা গবেষণা কাজে যথেষ্ট আগ্রহের অভাবও রয়েছে।

এ বিষয়ে লাইফ এন্ড আর্থ সাইন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান খন্দকার বলেন," ইউজিসি থেকে শিক্ষাছুটিতে নতুন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করায় এ সমস্যাটি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী বিভাগে শিক্ষক সংকট হলে বিভিন্ন কোর্সে অন্যান্য বিভাগ থেকে বা বাইরে থেকে শিক্ষক এনে ক্লাস পরিচালনা করার সুযোগ আছে। তবে ঐ বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে উপাচার্য মহোদয় সুস্থ হয়ে ফেরার পর ইউজিসি তে আবেদন করা হবে।"


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতার দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতার দাবি শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে ‘রাজাকার’ স্লোগানের ব্যাখ্যা দিলেন উপদেষ্টা নাহিদ - dainik shiksha ‘রাজাকার’ স্লোগানের ব্যাখ্যা দিলেন উপদেষ্টা নাহিদ উচ্চশিক্ষায় ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ - dainik shiksha উচ্চশিক্ষায় ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026700496673584