শিক্ষার্থী তিন শতাধিক। তার মধ্যে ছাত্র ১৯০ ও ছাত্রী ১১০ জন। শিক্ষক মোটে ১৫ জন, যদিও থাকার কথা ৩০ জন। শুধু তাই নয়, এর মধ্যে গণিত, আরবি, আইসিটি, মৌলভী, ইবতেদায়ি ও শরীর চর্চা ক্লাস নিচ্ছেন চারজন অতিথি শিক্ষক। এমন চিত্রই দেখা গেছে ঝালকাঠির সদর উপজেলার গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের তেরআনা শাহমাহমুদিয়া আলিম মাদরাসার।
এ অবস্থায় ক্লাস চালাতে হিমশিম খেতে হয় মাদরাসা কর্তৃপক্ষের। আর এর নেপথ্যে আছে এ প্রতিষ্ঠানের ৩০ পদের মধ্যে ১৫টি পদই শূন্য। কর্মচারী চারজনের জায়গায় আছেন তিনজন।
অভিভাবকদের মতে, মাদরাসাটি ভালোভাবে পরিচালনার জন্য শিক্ষাব্যবস্থাপনায় দক্ষ পরিচালনা কমিটির দরকার। সরকারের তরফে নতুন নতুন ভবন, আসবাবপত্র দেওয়া হচ্ছে ঠিকই। শিক্ষক না থাকায় পাঠদান দারুন ব্যাহত হলেও সেদিকে খেয়াল নেই পরিচালনা কমিটির।
শিক্ষক সংকটের মধ্যে কীভাবে পাঠদান চলছে জানতে চাইলে মাদারাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. শাহাদাত হোসেন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, গণিত, আইসিটি ইবতেদায়ি, ও শরীর চর্চা বিষয়ের ক্লাস চালাতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমিসহ সব সহকারী শিক্ষকদের প্রতিদিন কমপক্ষে ৭/৮টি ক্লাস নিতে হচ্ছে। আর এই বেশি ক্লাস নেয়া নিয়ে মাঝে মাঝে শিক্ষকদের মধ্যে কথা কাটাকাটিও হয়ে থাকে।
কোন কোন বিষয়ের শিক্ষক নেই-এমন প্রশ্নের উত্তরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, আইসিটি প্রভাষক, গণিত প্রভাষক, সহকারী শিক্ষক আইসিটি, ইবতেদায়ি প্রধান, সহকারী মৌলভী, সহকারী শিক্ষক শরীর চর্চা ও ইবতেদায়ি সাধারণ শিক্ষক্ষসহ লাইব্রেরিয়ান পদ খালি আছে আমাদের। এই পদের শিক্ষক খুবই দরকার মাদরাসার জন্য।
তিনি আরো বলেন, সেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কাছে আমরা ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে চাহিদা দিচ্ছি। কিন্তু কী কারণে চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষক দিচ্ছে না সেটা আমি জানি না। আমি কয়েকবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ বলেছেন, গণিত ও আইসিটি শিক্ষক কম থাকার কারণে দিতে পারছে না।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আরো জানান, সব শিক্ষকই শহরের প্রতিষ্ঠানে যেতে চান, আপনাদের প্রতিষ্ঠান গ্রামে এজন্য হয়তো পাচ্ছেন না। গত এপ্রিল মাসে আমরা চাহিদা আপডেট করেছি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে প্রচার করি কিন্তু বহুল প্রচারের পরেও আমরা কোনো আবেদন পাইনি।
মাদরাসার সভাপতি সৈয়দা আরজুমান বানু নারগিস বলেন, আমাদের মাদরাসা খুবই পরিপাটি, নতুন একাডেমি ভবন ও বিশাল খেলার মাঠ আছে, আসা যাওয়ার রাস্তা ভালো। শুধু শিক্ষক সংকট। শিক্ষক সংকট কেটে গেলে আমাদের শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়বে এবং শিক্ষার মান আরো উন্নত হবে।