করোনা মহামারির সময় সবাই যখন ঘরবন্দি তখন টেলিভিশনের মাধ্যমে ও অনলাইনে ক্লাস চালানোয় দেশের সব পর্যায়ে শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, করোনা মহামারির সময় যখন সবচেয়ে আপন ব্যক্তিটি আক্রান্ত হলে কেউ তার কাছে যাননি, সেরকম এক সময়ে শিক্ষকরা সাহস, ধৈর্য ও সহমর্মিতার পরিচয় দিয়েছেন। অনলাইনে পড়ানো, ক্লাস নেয়ার মত যে দক্ষতাগুলো তাদের ছিলো না, কিন্তু তারা করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে শেখারও সুযোগ পাননি করতে করতে শিখেছেন। তাদের এ ডেডিকেশন, এ অবদানের জন্য আমি কৃতজ্ঞতা ভরে সব পর্যায়ের শিক্ষকদের অভিনন্দন জানাই।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে শিখন ঘাটতি নিয়ে এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী আরো বলেন, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করনা রোগের শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ২৯ মার্চ থেকে আমরা টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাস শুরু করতে পেরেছিলাম। সেজন্য সময় পেয়েছিলাম মাত্র দশ দিন। সেসময় কেউ বাসা থেকে বের হচ্ছিলো না। কিন্তু আমরা আমাদের শিক্ষকদের বাসা থেকে স্টুডিওতে নিয়ে এসে ক্লাস রেকর্ড করিয়ে আবার তাদের ফিরিয়ে দিয়ে এসেছি। শিক্ষকরা কিন্তু এসেছেন। সেসময় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তাদের সবাইকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।
শিখন ঘাটতির গবেষণা নিয়ে তিনি বলেন, গবেষণার উদ্যোগ টা খুবই প্রয়োজন ছিলো। এর আগেও এ ধরনের গবেষণা হয়েছে। এটিই প্রথম না। তবে, এটি অনেক ব্যপকভাবে হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনার আঘাত আমাদের সব ক্ষেত্রে পরেছে, শিক্ষা ক্ষেত্রেও পড়েছে। তবে আগে থেকেই আমাদের লার্নিং লস ছিলো, সেটি ছিলোই। শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী ছিলো। কোথাও কোথাও ব্যপকভাবে ছিলো। এ অভিঘাত দীর্ঘদিন চলবে। এটা এমন নয় যে একটি বা দুইটি শিক্ষাবর্ষে এটা মেটানো যাবে। তবে করোনার সময় নিজে নিজে শেখার দক্ষতা শিক্ষার্থীরা অর্জন করেছে। সেদিক থেকে আমরা হারিয়েছিও অনেক, পেয়েছিও অনেক। তবে আমাদের এগিয়ে যেতেই হবে।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষায় বাজেট বাড়াতে হবে। আমাদের জাতির পিতা ৭০ এর প্রাক-নির্বাচনী ভাষণে বলেছিলেন, শিক্ষা বিনিয়োগের সর্বশ্রেষ্ঠ খাত, এখানে জিডিপির শতকরা ৪ ভাগ দেয়া উচিত। কেউ কেউ বলেন শিক্ষায় জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন আমরা পরোটাকে ধরলে ৩ ভাগের কাছাকাছি আছি। আমাদের এটাকে বাড়াতে হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সহযোগিতায় প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিরূপণে এ গবেষণাটি করেছে।মোট ২৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১৮ হাজার ৮৩৮ জন শিক্ষার্থীকে নির্বাচন করে বিষয়ভিত্তিক শিখন অবস্থা যাচাই করা হয়েছে।
করোনার সময় বিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে সব শ্রেণি ও বিষয়ে শিক্ষার্থীদের শিখন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ওই গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণাটি বলছে, সামগ্রিকভাবে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ক্ষতির পরিমাণ সর্বনিম্ন বলেও গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।