লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জে শিক্ষকদের নির্যাতনে কামরুল হোসেন শুভ (১৩) নামে এক মাদরাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গতকাল সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই শুভর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। শুভ রামগঞ্জ উপজেলার সাউধেরখীল গ্রামের ভূঁইয়া গাজী ব্যাপারী বাড়ির দুবাই প্রবাসী কামাল হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় মোহাম্মদীয়া এতিমখানা কমপ্লেক্সে হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল। মাদরাসা আবাসিকে থেকেই পড়ালেখা করত শুভ।
শুভর মা রেখা বেগম জানান, রোববার (১৮ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় মাদরাসা থেকে মোস্তফা কামাল নামে একজন শিক্ষক তাকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে তার ছেলে অসুস্থ বলে জানান। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে জানিয়ে পরিবারের লোকজনকে শিগগিরই হাসপাতালে আসতে বলেন ওই শিক্ষক। পরে এসে দেখেন তার ছেলে আর নেই। তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনে ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার গুণময় পোদ্দার জানান, ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
মাদরাসা সুপার হাফেজ মো. সাফায়েত জানান, শুভ ভোরে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়েছে। পরে সে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষককে তার মাথাব্যথার কথা জানায়। পরে মাথায় ব্যথানাশক মলম লাগিয়ে তাকে শুয়ে থাকতে বলা হয়। সকালে নাশতা খাওয়ার জন্য ডাকতে গেলে তার মুখ দিয়ে লালা ঝরতে দেখা যায়। পরে শুভকে ২-৩ জন ধরে তার কাছে নিয়ে আসে। সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয় এবং শুভকে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য নাজমুল হক বলেন, পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন করবে। এতে আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
রামগঞ্জ থানার ওসি এমদাদুল হক জানান, খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে। এতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।