নওগাঁর সাপাহারের খঞ্জনপুর তালকুড়া লতিফিয়া আলিম মাদরাসায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে টাকা দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি চালু করা হয়েছে। ইবতেদায়ি শাখার ২৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উপবৃত্তি দেয়ার মাধ্যমে ইতোমধ্যে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
শিক্ষক-কর্মচারী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রাথমিক পর্যায়ে সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে সরকারিভাবে উপবৃত্তি চালু থাকলেও ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য এখনো তা চালু হয়নি। যার ফলে বিশেষ করে মাদরাসার ইবতেদায়ি শাখায় ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি কম হয়ে থাকে। কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও উপস্থিতির হার সন্তোষজনক হয় না।
তাই, মাদরাসায় শিক্ষার্থী ভর্তি এবং ক্লাসে উপস্থিতি বাড়াতে বেতন স্কেল অনুযায়ী প্রতি মাসে নির্দিষ্ট অংকের টাকা চাঁদা তুলে একটি তহবিল গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন খঞ্জনপুর তালকুড়া লতিফিয়া আলিম মাদরাসার ২০ জন শিক্ষক এবং ৬ জন কর্মচারী। সেই তহবিলের টাকা থেকে অন্যান্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়মেই ইবতেদায়ি শাখায় উপবৃত্তি, মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি দেয়া এবং অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফিসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এতে মাদরাসায় শিক্ষার্থী ভর্তি এবং ক্লাসে উপস্থিতির হার বেড়েছে। এছাড়াও অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনা বৃদ্ধি এবং ক্লাসে উপস্থিতি বাড়াতে নিয়মিত হোম ভিজিট, মা ও অভিভাবক সমাবেশ এবং ইন-হাউজ মিটিং করা হচ্ছে বলে জানান শিক্ষকরা।গত শিক্ষাবর্ষে মাদরাসায় ৩০০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও চলতি শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী বেড়ে ৪৫০ জন হয়েছে বলে জানিয়েছেন খঞ্জনপুর তালকুড়া লতিফিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুল মাতিন। তিনি বলেন, মাদরাসায় ভর্তি বৃদ্ধিসহ ক্লাসে উপস্থিতি বৃদ্ধির জন্য কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে আমরা শিক্ষক-কর্মচারী মিলে নিজেদের বেতন থেকে কিছু টাকা দিয়ে একটি তহবিল গঠন করেছি। প্রতিষ্ঠান প্রধানকে প্রধান করে তিন সদস্যের পরিচালনা কমিটি সেই তহবিলের টাকা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পরিচালনা করা হচ্ছে।
মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দীন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারিভাবে উপবৃত্তি চালু থাকলেও মাদরাসাগুলোতে এখনো উপবৃত্তি চালু করা যায়নি। আমি ছয় মাস হলো মাদরাসাটির সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছি। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর এ মাদরাসায় ইবতেদায়ি শাখায় উপবৃত্তি চালু করতে পেরেছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শামসুল কবীর দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, মাদরাসাগুলো এমনিতেই শিক্ষার্থী তেমন পায় না। যদি শিক্ষার্থী বাড়াতে উদ্যোগ নিয়ে থাকে সেটা করতে পারে। কিন্তু খঞ্জনপুর তালকুড়া লতিফিয়া আলিম মাদরাসা এমন উদ্যোগ নিয়েছে কি-না আমার জানা নাই। তবে, কোনো প্রতিষ্ঠান যদি প্রতিষ্ঠানের মঙ্গলের জন্য উদ্যোগ নিয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই সেটা পজেটিভ হিসেবে ধরে নেবো।