প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বহীনতার শিকার হয়ে ৮ মাস বেতন বন্ধ হেলিপ্যাড নিম্ন-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষক-কর্মচারীর। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হালিম চৌধুরী বেতন-ভাতা বিলে স্বাক্ষর বন্ধ রেখেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে দৈনিক শিক্ষাডটকমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরে আসে। তদন্তে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের বেতন বঞ্চিত করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই শিক্ষকদের ৮ মাস বেতন বঞ্চিত করা প্রধান শিক্ষক আবদুল হালিম চৌধুরীর এমপিও বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করছে।
জানা যায়, কর্মচারীদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে উঠেছিল প্রধান শিক্ষক আবদুল হালিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। মারধরে শিকার এক কর্মচারী থানায় অভিযোগ করলে বেতন বিলে স্বাক্ষর করা বন্ধ করে দেন প্রধান শিক্ষক।
জানা গেছে, গত ডিসেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। তখন থেকেই প্রধান শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বিলে স্বাক্ষর করছিলেন না। বিষয়টি জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির একজন শিক্ষক জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ দেন। পরে মন্ত্রণালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের যৌথ স্বাক্ষরে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা উত্তোলনের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু শিক্ষকদের বেতন ছাড় করার কোন ব্যবস্থা নেয়নি অধ্যক্ষ। বিষয়টি গত ২৬ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে জানান ভোলার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও লালমোহনের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতায় বেতন বন্ধ ৯ শিক্ষক-কর্মচারীর
মন্ত্রণালয় সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, গত ২৪ আগস্ট মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়। শিক্ষকদের বেতন বিলে ইচ্ছাকৃতভাবে স্বাক্ষর করেননি প্রধান শিক্ষক। পরে প্রধান শিক্ষককে শিক্ষকদের বেতন ছাড়ের ব্যবস্থা নিতে বলা হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। এতে ৮ মাস বেতন বঞ্চিত হয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক কর্মচারীরা।
তাই এ অপরাধে প্রধান শিক্ষক আবদুল হালিমের এমপিও স্থগিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে। একইসাথে প্রধান শিক্ষকের এমপিও কেন স্থায়ীভাবে বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে আবদুল হালিমকে শোকজ করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র শিক্ষক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ছাড়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে এসব তথ্য জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
গত বছরের ৯ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. জাকারিয়াকে তার বাসায় ডেকে নিয়ে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি দিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠে প্রধান শিক্ষক আবদুল হালিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় লালমোহন থানায় হালিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন জাকারিয়া। থানায় ডায়েরি করার কারণে প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বিলে স্বাক্ষর বন্ধ করে দেন। বিষয়টি সুরাহা করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে কার্যালয়ে ডাকলেও হালিম চৌধুরী উপস্থিত হননি।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।