কুমিল্লার তিতাসে সেবা মাল্টিমিডিয়া আইডিয়াল স্কুলে শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর এক চোখ হারানোর ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছেন। ঘটনার পর থেকে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন কর্তৃপক্ষ।
দৃষ্টিশক্তি হারানো শিক্ষার্থী ফারহান ইসলাম রোহান (৮) দক্ষিণ আকালিয়া গ্রামের প্রবাসী রবিউল ইসলামের ছেলে। সে সেবা মাল্টিমিডিয়া আইডিয়াল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর বাংলা বিষয়ে পাঠদান চলাকালে শ্রেণিকক্ষে কথা বলার অপরাধে ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক সৌরভ মিয়া স্কেল দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রোহানকে আঘাত করেন। স্কেলটি রোহানের ডান চোখে পড়ে এবং সে অজ্ঞান হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা তাকে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। চোখ দিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে রোহানকে রাজধানীর ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয়। ৪ সেপ্টেম্বর রোহানের চোখে অস্ত্রোপচার হয়। ৫ সেপ্টেম্বর চিকিৎসক জানান, রোহান তার ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। ওই দিনই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও তিতাস থানায় একাধিক অভিযোগ দেন শিক্ষার্থীর মা মায়া আক্তার (৩৪)।
অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা পারভীন বানু। কমিটিতে আরও রয়েছেন– উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন দেলোয়ার হোসেন ছামি ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা কাজী মাহামুদুল হাসান। কমিটিকে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে স্কুলের পরিচালক শামিম আহমেদের ফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ করেননি।
তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী নাজমুল হক জানান, শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে সেবা মাল্টিমিডিয়া আইডিয়াল স্কুলের সহকারী শিক্ষক সৌরভ মিয়াকে (২৫)। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা পারভীন বানু বলেন, ‘ঘটনা তদন্ত করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আমরা জানতে পেরেছি, ঘটনার পর থেকে বিদ্যালয়টি তাদের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে।’