মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে উঠেছে।]
গত রোববার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক।
সহকারী শিক্ষক জাকারিয়া খানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন হরিরামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সাইফুল ইসলাম।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মোহাম্মদ জাকারিয়া খান বিদ্যালয়ে এবং তার বাড়িতে (শিক্ষক) টিউশনের সময়ে প্রায়ই ওই ছাত্রীদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। কয়েকদিন আগে তিনি ওই ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করলে, তারা বাড়িতে এসে কান্নাকাটি করে পরিবারকে বিষয়টি জানায়।
তবে অভিযোগটি ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করে জাকারিয়া খান বলেন, “আমার সম্মানহানীর জন্য গ্রামের কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে উঠে-পড়ে লেগেছে। তারা আমাকে ও আমার পরিবারকে হেয় করতে এবং সামাজিক অবস্থান ভুলণ্ঠিত করতে এ অভিযোগ করেছে।”
তারা অন্য শিক্ষার্থীদের দিয়েও মিথ্যা অভিযোগ করানোর চেষ্টা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা আমার বাড়িতে ৫০-৬০ জন লোক পাঠিয়েছে। তারা নানাভাবে হুমকি দিয়েছে, আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।”
তার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলায় তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও এলাকাবাসীর কাছে বিচার চেয়েছেন কিন্তু সমাধান হয়নি বলে দাবি তার।
এ বিষয়ে গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিক বিশ্বাস বলেন, “শুক্রবার আমরা সমাধানে বসতে চেয়েছিলাম। তবে শুক্রবার সমাধান হয়নি।”
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করবো। যদি তদন্তে দোষী প্রমাণিত হয় তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আখতার বলেন, “অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ঘটনাটি প্রমাণিত হলে শাস্তি দেয়া হবে। তবে তদন্তের আগে ওই শিক্ষককে আরেকটা স্কুলে সরিয়ে দেওয়া হবে। তারপর তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় তখন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেয়া হবে।”
সোমবার বিকেলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, “জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে সহকারী শিক্ষক জাকারিয়া খানকে চরাঞ্চলের একটি স্কুলে বদলির (সাময়িক) বিষয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।”