শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, দেশ ছাড়লেন মালয়েশিয়ান শিক্ষার্থী

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির গুরুতর অভিযোগ তুলে মালয়েশিয়ার এক শিক্ষার্থী বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক হারুন-আর-রশিদ। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাটেনারি মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ২৫ সেপ্টেম্বর ভাইস চ্যান্সেলর বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন এবং জানিয়েছেন, অধ্যাপক হারুন-আর-রশিদ তার প্রতিবেশী হিসেবে তাকে যৌন হয়রানি করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, অধ্যাপক হারুন তার বাড়িতে ‘ওড টাইমে’ প্রবেশ করতেন এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ম্যাসেজ পাঠাতেন। এক পর্যায়ে তিনি রান্নাঘরের জানালার পাশ থেকে যৌন হয়রানিমূলক কাজও করেন। ভীত হয়ে নিরাপত্তার জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ও মালয়েশিয়ান দূতাবাসের সহায়তা চান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।

অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক হারুন-আর-রশিদ বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘সোনালি দল’-এর সভাপতি। তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একজন শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাস টেস্টের রেজাল্ট আনার জন্য ব্যক্তিগত চেম্বারে যেতে বলতেন তিনি, যা ইন্ডিভিজুয়ালি করতে হতো। আরেকজন নারী শিক্ষার্থী তাকে ‘লুচ্চা’ বলে উল্লেখ করেন এবং জানান, তিনি ক্লাস পরীক্ষায় পারফর্ম করতে না পারলে ব্যক্তিগত কক্ষে ডেকে পাঠাতেন।

শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশে অংশ নেয়া নেপালি শিক্ষার্থী সিভাগিরি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাদের অভিভাবকের মতো। তাদের থেকে এমন আচরণ দুঃখজনক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই আমরা দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তাদের কাছে দু’জন শিক্ষকসহ অভিযোগ করেছিলেন। তিনি দূতাবাসের মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।

তদন্তের অগ্রগতি ও পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সবার দৃষ্টি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দিকে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0021579265594482