শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তার বই গছানোয় ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকদের অসন্তোষ

রুম্মান তূর্য |

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তার লেখা বই বিভিন্ন কলেজে বিক্রির জন্য গছিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কলেজ শিক্ষকদের মাঝে বইটি বিতরণ করা হয়। যার বই বিতরণ করা হয়েছে, তিনি একজন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা। আর যাদেরকে ডেকে বই গছিয়ে দেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যেও রয়েছেন শিক্ষা ক্যাডার। এভাবে ডেকে নিয়ে বই ধরিয়ে দেয়ার ঘটনাকে তারা অপমানজনক মনে করছেন। এ নিয়ে দৈনিক আমাদের বার্তার কাছে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মেলান্দহে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকরা। 

জানা গেছে, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির উচ্চতর ওই বইটি লিখেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখার উপপরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসসহ চার লেখক। প্রকাশ করেছে হাসান বুক হাউস নামের এক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। গত বৃহস্পতিবার জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার একাডেমিক সুপারভাইজার মো. আশরাফুল আলম এলাকার বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকদের ডেকে বইট বিতরণ করেন। 

মেলান্দহ সরকারি কলেজে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত এক শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার সকালে কলেজে টেলিফোন করে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার গণিতের একজন শিক্ষককে তার কার্যালয়ে যেতে বলেন। আমরা পিয়নকে পাঠাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি বললেন, শিক্ষককে পাঠাতে। শিক্ষক গেলে তাকে বইটি ধরিয়ে দেয়া হয়। সে সময় একাডেমিক সুপারভাইজার বলেন, বইটির লেখক শিক্ষা অধিদপ্তরে কর্মরত। একজন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা। অর্ডার হয়েছে তার বইটির প্রচারণা চালানোর। 

ওই শিক্ষক আরো বলেন, যদিও এ ধরনের বই নিয়ে প্রকাশনা সংস্থাগুলোর লোকরা কলেজে ভিড় করেন। কিন্তু এজন্য একজন ক্যাডার কর্মকর্তাকে ডাকিয়ে নেয়া হলো একাডেমিক সুপারভাইজারের কার্যালয়ে। এর এখতিয়ার কি একাডেমিক সুপারভাইজারের আছে?  

বই বিতরণের বিষয়টি জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় একাডেমিক সুপারভাইজার মো. আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, বই এসেছে। সেগুলো সব কলেজের গণিত প্রভাষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। বইগুলো কে পাঠিয়েছেন জানি না, তবে শিক্ষা অফিসার মহোদয় বইগুলো রিসিভ করেছেন। তিনি বলেছেন, তাই কলেজের শিক্ষকদের ডেকে তাদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। 

মেলান্দহ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম এলাহী আখন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বইয়ের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। 

বইগুলো কলেজে কলেজে বিতরণের নির্দেশনা দিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।  

এ বিষয়ে জানতে ওই বইয়ের লেখক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের করা হলে তিনি বলেন, এ বইটি একটি ব্যক্তিগত বিষয়। বেশ কয়েক বছর আগে বইটি লিখেছি। এটি বিতরণ বা প্রচারণা চালাতে অধিদপ্তর থেকে কোনো নির্দেশনা দেয়ার প্রশ্নই আসে না। আমার বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইলিং শুরু হয়েছে। কেউ আমাকে হেয় করতে এমনটি করতে পারেন। 

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নিজ কক্ষে বসে নিজের লেখা নোট-গাইড বিক্রির অভিযোগ উঠেছিলো তৎকালীন মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক মো. এলিয়াছ হোসাইনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে সে সময় দেশের শিক্ষা বিষয়ক একমাত্র ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর সে বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর তাকে সিলেটের বৃন্দাবন সরকারি কলেজে বদলি করা হয়।

 

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033068656921387