নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার শিলমাদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শ্রীকৃষ্ণ চন্দ্র প্রামাণিক দীর্ঘদিন যাবৎ বিদ্যালয়ে পাঠদান না করে কাজ করছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসে। এদিকে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট। কাগজে-কলমে স্কুলটিতে চারজন শিক্ষক থাকলেও পাঠদান করাচ্ছেন একজন।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু রায়হান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মোট পদ সংখ্যা ৬টি হলেও বর্তমান আছে ৪ জন। এরমধ্যে একজন প্রশিক্ষণে আছেন। শ্রীকৃষ্ণ চন্দ্র প্রামাণিক অঘোষিতভাবে প্রায় এক বছর ধরে উপজেলা শিক্ষা অফিসে আইসিটি বিষয়ের কাজ করছেন। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে আমাকে শিক্ষা অফিসে দৌড়ঝাঁপ করতে হয়। যার কারণে আমিও পাঠদান করাতে পারি না।
বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ১০৫ জন। প্রতিদিন গড়ে ৮০ থেকে ৮৫ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসেন। ফলে সহকারী শিক্ষক ইউনুছ আলী জোয়ারদারকে পুরো বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে পাঠদান করাতে হচ্ছে। এতে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। ইতোমধ্যেই এ অবস্থার কারণে গতবছরের চেয়ে চলতি বছর শিক্ষার্থী ভর্তি কমেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার অন্যান্য শিক্ষকরা অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বর্তমানে শিক্ষক শ্রীকৃষ্ণের প্রভাবে চলছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। তার পছন্দমাফিক শিক্ষকদের কাজ খুব সহজেই হয় আর অপছন্দের শিক্ষকদের কাজ আটকে রেখে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। শিক্ষা অফিসের সবাই বর্তমানে শ্রীকৃষ্ণের ওপর নির্ভরশীল। শিক্ষা অফিস বর্তমানে শ্রীকৃষ্ণের নেতৃত্বে দালালের আতুরঘরে পরিণত হয়েছে। তাই আমরা শ্রীকৃষ্ণকে শিক্ষা অফিসে নয় তাকে তার স্কুলে দেখতে চাই।
সহকারী শিক্ষক শ্রীকৃষ্ণ চন্দ্র প্রামাণিক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন. অফিসে আইসিটি বিষয়ে দক্ষ জনবল না থাকায় সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন আমাকে কাজ করার নির্দেশ দেন। আমি আর এই অফিসে কাজ করতে চাই না। অনেকের কাছে মন্দ হয়ে গেছি। আমি আমার কর্মস্থল বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করছি, কিন্তু কর্মকর্তারা আমাকে যেতে দিচ্ছেন না।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু রায়হান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অফিসে জনবল নিয়োগ দেয়ার জন্য লিখিতভাবে জানিয়েছি। কোনো লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে শ্রীকৃষ্ণকে দিয়ে অফিসের কাজ করানো হচ্ছে। তবে শিক্ষক না থাকায় ওই বিদ্যালয়ের পাঠদানও চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তবে আমি বিষয়টি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।