মেহেরপুরে গাংনী উপজেলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের একটি মামলার তদন্ত চলাকালে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে মোবারক লাঞ্ছিত হয়েছেন। এঘটনায় গাংনী থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী হোসনে মোবারক। গাংনী থানার ওসি বানী ইসরাইল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে ইউএনও, সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন। এর আগেই যুবকরা পালিয়ে যান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর আদালতের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের একটি মামলা তদন্তের শুনানির জন্য উভয়পক্ষকে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ডাকা হয়। সোমবার দুপুরে বাদী-বিবাদী অফিসের সামনে হাজির হলে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে মোবারক উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
একপর্যায়ে ১০-১২ জন যুবক রাগান্বিত হয়ে হোসনে মোবারকের হাতে থাকা মোবাইলটি কেড়ে নেয় ও শার্টের কলার ধরে টানাহেঁচড়া করে লাঞ্ছিত করে। এর প্রতিবাদ জানালে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী তোফাজ্জেল হোসেনকেও লাঞ্ছিত করে ও হুমকি দেয়।
গাংনী থানার ওসি বানী ইসরাইল বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ মাঠে রয়েছে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা বলেন, জানতে পেরে জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করি। পরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছেন জেলা প্রশাসক।
উল্লেখ্য, গাংনী উপজেলার হাড়িয়াদহ গ্রামের সোহরাব আলীর মেয়ে সীমা খাতুনের সঙ্গে একই উপজলার ঝোরপাড়া গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে তুহিন আলীর বিয়ে হয়। পরে পারিবারিকভাবে ভুল বোঝাবুঝি হলে তুহিন আলী বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে। এ নিয়ে সীমা খাতুন আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে গাংনী উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। মামলা নিষ্পত্তি করতে তিনি স্বামী তুহিনকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু বাদী সীমা খাতুন নারাজি দিয়ে চলে যান। পরে ওই মামলা পুনরায় প্রতিবেদন করে নিষ্পত্তি করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে শুনানি করছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে মোবারক।