পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নাজমুল হকের বিরুদ্ধে উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষকদের শিক্ষাক্রম বিস্তরণ প্রশিক্ষণের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ফোল্ডার, কলম ও প্যাড ক্রয় বাবদ ২০০ টাকা করে ৬৯৬ জন প্রশিক্ষণার্থীর জন্য মোট সরকারিভাবে ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৮০০ টাকা বরাদ্দ ছিল। অথচ প্রতি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ব্যয় করা হয়েছে মাত্র ৫০ টাকা। যার মধ্যে ছিল নিম্নমানের ৩০ টাকা দামের ফোল্ডার, ৫ টাকা দামের কলম ও ১৫ টাকা দামের প্যাড। হিসাব অনুযায়ী প্রতি প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ভ্যাট বাদে ১৩৫ টাকা। সে হিসেবে ৬৯৬ জন প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে ভ্যাট বাদে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ৯৩ হাজার ৯৬০ টাকা। সকালে ও বিকালে প্রতি প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীর জন্য সরকারিভাবে ৮০ টাকা করে ৭৪৬ জনের মোট ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলে প্রতি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ভ্যাটসহ ৪১ টাকা করে ব্যয় করা হয়েছে। বাকি ৩৯ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। সে হিসেবে ৭৪৬ জন প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীর নাস্তা বাবাদ আনুমানিক আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ ২৯ হাজার ৯৪ টাকা। ভেন্যু ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারিভাবে ৫৫ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও কোনো অর্থ খরচ না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
অফিস সহকারী প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে প্রতিদিন উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তাকে ট্রেনিং সংক্রান্ত কাজে ব্যবহার করা হয়নি এবং কোনো ভাতা দেয়া হয়নি। ফলে অফিস সহকারীর জন্য বরাদ্দকৃত ৬ হাজার টাকার পুরোটাই আত্মসাৎ করা হয়েছে। এমএলএসএস ১৩ জনের জন্য বরাদ্দ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু নিয়োগ করা হয়েছে মাত্র ৭ জনকে। তাদেরকে ভাতা বাবদ প্রদান করা হয়েছে ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। এ ক্ষেত্রে আত্মসাতের পরিমাণ ১৫ হাজার টাকা। সরকারিভাবে প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য শিক্ষা উপকরণ, দুই বেলার নাস্তা, ভেন্যু, অফিস সহকারী ও এমএরএসএস এর জন্য সর্বমোট বরাদ্দ ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৩০০ টাকা। ব্যয় করা হয়েছে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ২০০ ৪৬ টাকা। অবশিষ্ট ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রশিক্ষণ নেয়া কেশবপুর ফজলুল হক ফাজিল মাদরাসার শিক্ষক মো. ইউসুফ আলম বলেন, আমরা শিক্ষা বিস্তরণের জন্য অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ নিয়েছি। অর্থের জন্য নয়। তবে প্রশিক্ষণের জন্য সরকারিভাবে কতো টাকা বরাদ্দ ছিল আমার জানা নেই।
প্রশিক্ষণের ভেন্যু বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. নার্গিস আখতার জাহান বলেন, আমাকে কোনো ধরনের ভাড়ার টাকা পরিশোধ করা হয়নি। আমি জানিও না ভাড়া বাবদ কোনো বরাদ্দ আছে কিনা।
বাউফল মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী মো. জালাল আহম্মেদ বলেন, আমি প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে প্রতিদিন উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও আমাকে ডাটা এন্ট্রি কাজে ব্যবহার করা হয়নি এবং কোনো ভাতাও প্রদান করেনি। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নাজমুল হক বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পর্ণ মিথ্যা। ওই প্রশিক্ষণের যাবতীয় সবকিছু জেলার কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় মনিটরিং করেছেন। যে পরিমাণ খরচ হয়েছে সে পরিমাণ টাকা উত্তোলন করা হবে বাকি টাকা সরকারি সংশ্লিষ্ট ফান্ডে জমা হবে।