ঢাকডোল পিটিয়ে কথিত নতুন সফটওয়্যার ব্যবহার করে অনলাইনে আবেদন জমা নিলেও সরকারি কলেজের শিক্ষক বদলিতে আগের মতোই টাকার খেলা ও প্রতিহিংসাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। করোনার মধ্যে বন্ধ থাকা সরকারি কলেজের শিক্ষককে কথিত জনস্বার্থে বদলি করা হয়েছে। বদলির আবেদনই করেনি তাদেরকে বদলি করা হলেও স্বামী-স্ত্রী এক জায়গায় আসার জন্য দুই বছর আগে থেকে চেষ্টা করলেও তাদের আবেদনে সাড়া মেলেনি। এক কলেজে এক বিষয়ে একজন শিক্ষক থাকা কলেজটিকে শূন্য করা হয়েছে। সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির আসন্ন নির্বাচনী রসায়নও কাজ করেছে। বদলির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পরও দশদিন ফাইল আটকে রেখে বেদরকারি উপরিচালকের নেতৃত্বে মোটা অংকের টাকা ‘কালেকশন’ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা ১৪৩জন শিক্ষক বদলির আদেশ নিয়ে দৈনিক শিক্ষার ময়নাতদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
শিক্ষা প্রশাসনের কতিপয় মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে অসৎ কর্মকর্তা এইসব অপকর্মে সঙ্গে যুক্ত। তাদের চাতুর্যে ঢাকডোল পিটিয়ে বদলিতে সরকারি কলেজের শিক্ষকদের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদন নেয়া ও সফটওয়্যার ব্যবহার ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। অভিজ্ঞরা বলছেন, যেই লাউ সেই কদু। সেই মিস পোস্টিং। সেই প্রতিহিংসার বদলি। সেই টাকার খেলা। সেই কতিপয়তন্ত্র। করোনাকালে বন্ধ কলেজের শিক্ষকদের বদলিতে কি জনস্বার্থ লুকায়িত তা জানতে চায় কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক কুখ্যত অতিরিক্ত সচিব (শিক্ষা ক্যাডার থেকে) মোল্লা জালালের সনাতন সংস্করণ মন্ত্রণালয়ে অ্যাকটিভ থাকায় সরকারি কলেজ সংক্রান্ত নতুন শিক্ষামন্ত্রীর সব নতুন উদ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে। এমতাবস্থায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষা ক্যাডারের উপসচিবদের অন্যত্র বদলি এবং প্রভাষক ও সহকারি অধ্যাপকদের বদলির দায়িত্বও মন্ত্রণালয়ে নিয়ে নেয়ার দাবি উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, নয়জনের বদলির আবেদন ছুঁয়েও দেখেনি অথচ তিনশ গজের মধ্যে এক কলেজ থেকে আরেক কলেজে বদলি করা হয়েছে।
দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে দেখা যায়, গোপালগঞ্জের শেখ হাসিনা সরকারি বালিকা উচচ বিদ্যালয় ও কলেজের পদার্থবিদ্যার প্রভাষক উত্তম কুমার বদলির আবেদনই করেনি অথচ এই করোনার বন্ধের মধ্যে তাকে তিনশ গজ দূর সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজে বদলি করা হয়েছে। উত্তম শেখ হাসিনা কলেজে বছরখানেক ছিলেন।
জামালপুরের এ এইচ জেড সরকারি ডিগ্রি কলেজের অর্থনীতির প্রভাষক নাহিদা সুলতানা সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে বদলির জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তার জন্য আরো কষ্টকর আরেক কলেজে বদলি করা হয়েছে করোনার মধ্যে।
শুধাংশু নামের ইতিহাসের একজনকে অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা কষে গালমন্দ করেছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
লালমনিরহাটের মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজ থেকে বাংলার দুইজনকেই বদলি করে নিয়েছে অথচ সেখানে নতুন কাউকে দেয়নি। একই কলেজে ইতিহাসের একজন শিক্ষক ৯ বছর ধরে আছেন, তার বিভাগে আরো শিক্ষক আছে কিন্তু তাকে বদলি করেনি।