ঢাকঢোল পিটিয়ে ও ফেসবুকে ঝড় তুলে সমিতিবাজরা পদোন্নতির ক্রেডিট নিলেও বরাবরের মতোই বাস্তবে কোনো সুবিধাই পাচ্ছেন না পদোন্নতিযোগ্য শিক্ষা ক্যাডারের সাধারণ সদস্যরা। গত ৯ মে বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির প্রথম সভা শুরুর আগে আওয়াজ তোলা হয় তিন হাজার তিনশ আট জন শিক্ষককে পদোন্নতি দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।তাদের মধ্যে ২২তম ব্যাচের প্রায় সাড়ে পাঁচশ জন, ২৩ ব্যাচের ১৭ জন, ২৪ ব্যাচের এক হাজার আটশ আটচল্লিশ জন, ২৫তম ব্যাচের ১১২ জন ও ২৬ ব্যাচের ছয়শ ৪৬জন রয়েছেন।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
কিন্তু আজ ৩০ মে ডিপিসি সভাসূত্র দৈনিক শিক্ষাকে জানায়, মাত্র এক হাজার ৮০ জনকে পদোন্নতি দেয়া হতে পারে। তারা সহকারি ও সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন। এটা না ব্যাচভিত্তিক না শুধু শূন্যপদভিত্তিক। এখানেই চাপা কষ্ট প্রশাসন ক্যাডার নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা ক্যাডারের অধিকাংশ সদস্যের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, প্রথম সভাটি পানচিনি সমতূল্য। এরপর টানা তিনটি সভায় অনুপস্থিত ছিলেন শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের চলতি দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক। গতকালের (শনিবার) সভায় শেষ মিনিটে উপস্থিত হলেও সভার ‘বাড়ীওয়ালা’ গরহাজির থাকায় ফল শূন্য।
এদিকে পদোন্নতি পাওয়ার পর ভালো পদায়নের জন্য ঢাকার বাইরে একটি বেসরকারি কলেজে চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত একজন রতনের বাড়ীতে ছুটছেন কতিপয় ‘মর্যাদাবান’ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা। বিভিন্ন সময়ে তারা নিজেদের প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন যে, বাংলাদেশে শুধু তারাই জ্ঞানী, কারণ তারা প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরিতে প্রবেশ করেছেন।
এই ‘কতিপয় মর্যাদাবান’ ক্যাডার কর্মকর্তা নিজেদের শিক্ষক পরিচয় দিতেও লজ্জা পান এবং বেসরকারি শিক্ষকদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে থাকেন। ক্যাডারের জুনিয়দের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষকদের সম্পর্কে হিংসুটে মনোভাব প্রোত্থিত করে দেন নানা কৌশলে। দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি থেকে অদ্যাবধি তিনশতাধিক ‘মর্যাদাবান’ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা বেসরকারি রতনের বাড়ীতে হাজিরা দিয়েছেন। রতনের বাড়ীতে নিয়মিত না যাওয়ায় গদিচ্যুত হতে যাচ্ছেন মাদরাসা বোর্ডের একজন। পুলিশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে ঢুকে শিক্ষা ভবনে পদায়ন বাগিয়ে এমপিওভু্ক্ত বেসরকারি শিক্ষকদের কাছ থেকে বিকাশ-নগদে দেদার কামাই করছেন একজন। যদিও মুখে তিনি বেসরকারি শিক্ষকদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন শিখিয়ে দেয়া বুলির অংশ হিসেবে। তিনিও বেসরকারি রতনের বাড়ীতে হাজিরা দেন নিয়মিত। রতনকে বদলি ও এমপিও সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করেন। রতনকে পেতে এই পুলিশ-টার্নড-শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন পদোন্নতির আশায় থাকা এক হাজার ৮০ জনের মধ্যে কেউ কেউ।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন