আমাদের বার্তা প্রতিবেদক: শিক্ষার আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিতে শিক্ষাখাতে প্রস্তাবিত বাজেটের ২০ শতাংশ বা মোট জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দসহ ১৫ দফা দাবি পেশ করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। শনিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এসব দাবি পেশ করেনে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল মুনতাছির আহমাদ।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল বশর আজিজী সভাপতিত্বে শিক্ষা বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হয়, ১. দেশের সকল শিক্ষার্থীর পড়াশোনার ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে ২. নৈতিকতা সমৃদ্ধ জাতিগঠনে শিক্ষার সর্বস্তরে কোরআন ও ধর্মীয় শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে ৩. প্রাথমিক স্তরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নিশ্চিতকল্পে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিতে হবে
৪. শিশুদের জন্য পাঠদান আনন্দঘন ও আকর্ষণীয় করার উদ্দেশ্যে প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষাদান নিশ্চিতকল্পে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে বরাদ্দ দিতে হবে ৫. কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার ৩০ শতাংশে উন্নীত করতে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদান দিতে হবে ৬. একটি আন্তর্জাতিক মানের মডেল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে ৭. বেসরকারি বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ব্যয়ভার কমাতে প্রস্তাবিত বাজেটে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে ৮. শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহজ শর্তে ঋণগ্রহণ ব্যবস্থা চালু ও তা সহজলভ্য করতে হবে ৯. নারী শিক্ষার্থীদের অবাধ চলাফেরা, নিরাপত্তা নিশ্চিত ও স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আলাদা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে প্রস্তাবিত বাজেটে অগ্রাধিকার দিতে হবে ১০. দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে খাবারের মান বৃদ্ধি ও হলে যথাযথ সিট ব্যবস্থা করতে হবে ১১. কওমি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নে থোক বরাদ্দ দিতে হবে ১২. কওমি মাদরাসার তাকমিল (মাস্টার্স) এর সার্টিফিকেটকে সাধারণ মাস্টার্সের সার্টিফিকেটের মত সমমানের মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে ১৩. কওমি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দেশে ও দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টিতে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে ১৪. আলিয়া শিক্ষার অবকাঠামো নির্মাণ ও সম্প্রসারণে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় দিতে হবে এবং ১৫. প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কামিল মাদরাসা স্থাপনে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে।এ ছাড়া আট দফা খাতভিত্তিক প্রস্তাবনায় বলা হয়-প্রাথমিক শিক্ষায় বরাদ্দ ২০ শতাংশ বাড়াতে হবে। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ৩০ শতাংশ বাড়াতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর বাজেটের নূন্যতম ১০ শতাংশ পর্যন্ত বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ নজরদারি করতে হবে এবং মেধাবী, আর্থিক অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। কওমি মাদরাসার সাধারণ শিক্ষার্থীদের জাতীয় শিক্ষাধারার সাথে সম্পৃক্ত করতে (আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া) শিক্ষা বোর্ডের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। আলিয়া মাদরাসায় বরাদ্দ ২৫ শতাংশ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি শ্রমবাজার ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবারের বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে।
বাজেট প্রস্তাবনা অনুষ্ঠানে আরো আলোচনা করেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল শিব্বির আহমাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসাইন নূর, অর্থ ও কল্যাণ সম্পাদক হোসাইন ইবনে সরোয়ার, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক খায়রুল আহসান মারজান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক মুহাম্মাদ ইবরাহীম খলীল, কওমি মাদরাসা সম্পাদক উবায়দুল্লাহ মাহমুদ, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক ইউসুফ মালিক, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুহাম্মাদ মেহেদী হাসান প্রমুখ।