শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা অনুদান ব্যয় শিক্ষার্থীর কল্যাণে, আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ১৫ নির্দেশনা

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আসা অনুদান প্রতিষ্ঠানে উন্নয়নে ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ব্যয় করার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারি বিধি-বিধান যথাযথোভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলোকে। অনুদান আয় ব্যয়ের বিবরণী অধিদপ্তরের অর্থ ও ক্রয় শাখাকে জানাতে বলা হয়েছে সরকারি-বেসরকারি স্কুল কলেজকে।

একই সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জেলা-উপজেলা শিক্ষা অফিসের আর্থিক স্বাচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ১৫ দফা নির্দেশনা দিয়েছে অধিদপ্তর। মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা এক আদেশে এ ১৫ নির্দেশনা দেয়া হয়। 

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেসরকারিভাবে নেয়া অনুদান সরকারি বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ও ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে এবং আয়-ব্যয়ের বিবরণী অর্থ ও ক্রয় শাখাকে অবহিত করতে হবে।

আদেশে আরো বলা হয়েছে, পিপিএ-২০০৬, পিপিআর-২০০৮ ও সংশ্লিষ্ট আর্থিক বিধি-বিধান প্রতিপালন করে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সব প্রকার ক্রয় কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে।

প্রতিষ্ঠানের অর্থ সংস্থান মোতাবেক আর্থিক বিধি-বিধানের আলোকে অর্থ ব্যয় নির্বাহ করতে হবে।

 প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর (মুসক) কর্তনপূর্বক রাষ্ট্রীয় কোষাগারে (চালানের মাধ্যমে) জমা করতে হবে এবং জমাকৃত চালানের ফটোকপি প্রতি অর্থবছরের আগস্ট মাসের মধ্যে (ই-মেইল: [email protected]) আবশ্যিকভাবে অর্থ ও ক্রয় শাখায় সহকারী পরিচালক-২ এর কাছে জমা দিতে হবে।

অগ্রিম উত্তোলিত অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রচলিত সরকারি আর্থিক বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।

আইবাস প্লাস প্লাসের মাধ্যমে দেয়া বরাদ্দ বর্ণিত কোডগুলোর বিপরীতে বিদ্যমান সরকারি নীতিমালা অনুসারে ব্যয় করতে হবে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত কোনোভাবেই অতিরিক্ত এই ব্যয় করা যাবে না।

আইবাস প্লাস প্লাসের মাধ্যমে এক কোডে বরাদ্দকৃত অর্থ অন্য কোডে ব্যবহার ব্যয় করা যাবে না।

নিরীক্ষা কার্য সম্পাদনের জন্য বাজেট রেজিস্ট্রার, ক্যাশ বই, চেক ইস্যু সংক্রান্ত রেজিস্টার, স্টক রেজিস্টার, বিল রেজিস্টার ও বিল- ভাউচার সংক্রান্ত সব ফাইল সংরক্ষণ করতে হবে।

অব্যয়িত অর্থ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমর্পণ করে সমর্থনোর প্রত্যয়নপত্র সংরক্ষণ করতে হবে।

সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সংগৃহীত তহবিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবে জমা করতে হবে এবং উত্তোলনের ক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান ও প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা পরিচালনা কমিটি প্রধানের যৌথ স্বাক্ষরে বায় নির্বাহ নিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী-অস্থায়ী সম্পত্তি সংক্রান্ত আয় ব্যায়ের (ভাড়া, ইজারাসহ) ক্ষেত্রে সরকারি প্রচলিত বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী-অস্থায়ী সম্পত্তি সংক্রান্ত আয়-ব্যয়ের (ভাড়া, ইজারাসহ) ক্ষেত্রে সরকারি প্রচলিত বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে।

অফিস-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানরা তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব হস্তান্তরের আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ক ডকুমেন্টস (বাজেট রেজিস্টার, ক্যাশ বই, চেক ইস্যু সংক্রান্ত রেজিস্টার, স্টক রেজিস্টার, বিল রেজিস্টার, বিল-ভাউচার ইত্যাদি) যথাযথভাবে হস্তান্তর করবেন এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিস-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানরা তাঁদের পূর্বসূরীর কাছে থেকে বর্ণিত ডকুমেন্টস সঠিকভাবে বুঝেঝ নিবেন।

অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সময়ে সময়ে জারিকৃত সব সরকারি বিধি-বিধান মেনে চলতে হবে।

প্রতিটি শিক্ষা অফিস এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রতি অর্থবছরের আগস্ট মাসের মধ্যে বার্ষিক তা পরিকল্পনা (APP) ও বার্ষিক আয়- ব্যয় প্রস্তুত করে সহকারী পরিচালক-২, অর্থ ও ক্রয় শাখা, মাউশি (ই-মেইল: [email protected]) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বাংলাদেশ, ঢাকা এর নিকট জমা দিতে হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অর্থ ও ক্রয় শাখার কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ের যেকোনো অফিস-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে তাৎক্ষণিকভাবে পরিদর্শন করবেন।

অধিদপ্তর বলছে, শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের এবং পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তররের আওতধীন আঞ্চলিক কার্যালয়, সরকারি কলেজ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, জেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আয় ব্যয়ের ক্ষেত্রে আয়কর, মূসক, উৎসে আয়কর কর্তন, পিপিএ-২০০৬ ও পিপিআর-২০০৮সহ সংশ্লিষ্ট আর্থিক বিধিবিধান অনুসরণ করা হয় না বলে অডিট আপত্তি উত্থাপন করে। আগে এ বিষয়ে জরুরি নির্দেশনা জারি করা হয়েছিলো। আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের স্মারক অনুযায়ী এসব নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হলো। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! জাল সনদে চাকরি, লাইব্রেরিয়ানকে তলব - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি, লাইব্রেরিয়ানকে তলব শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ - dainik shiksha শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ - dainik shiksha প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035140514373779