করোনা ভাইরাস মহামারির থাবায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর খুলে দেয়া হলে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া কার্যক্রম শুরু করা প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া কার্যক্রম শুরু প্রস্তুতি নিতে ১০ দফা নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তর থেকে এসব নির্দেশনা দিয়ে চিঠি সব জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
অধিদপ্তরের নির্দেশনাগুলোতে বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুললে ক্রীড়া কার্যক্রম শুরু করার সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। এজন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শারীরিক শিক্ষা বিভাগ, ক্রীড়াকক্ষ, কমনরুম (যদি থাকে) ধুয়েমুছে, জীবাণুনাশক স্প্রে এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে ক্রীড়া কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নিতে হবে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জিমনেসিয়াম, খেলার মাঠ ইত্যাদিকে ক্রীড়া কার্যক্রম চালু করার উপযোগী করে তুলতে হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম চালু হলে ক্লাস শুরুর আগে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে দৈনিক সমাবেশ এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশন বাধ্যতামূলকভাবে করতে হবে।
সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সময়সূচি নির্ধারণ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের শারীরিক শিক্ষা বিভাগকে জানাতে হবে।
নির্দেশনায় অধিদপ্তর আরও বলছে, জাতীয় স্কুল, মাদরাসা, কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ-৪ অনুযায়ী সমিতির আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় (স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি) বাধ্যতামূলকভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রীষ্মকালীন এবং শীতকালীন ক্রীড়া অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
এতে আরও বলা হয়েছে, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, যুবদিবস, জাতীয় ক্রীড়া দিবস (৬ এপ্রিল), জাতীয় শিশু দিবসে খেলাধুলার আয়োজন করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে নির্দেশনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা আলাদা কয়েকটি ইভেন্টের জন্য বিভিন্ন টিম গঠন করে তা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের শারীরিক শিক্ষা শাখায় পাঠাতে বলা হয়েছে। নির্দেশনায় অধিদপ্তর বলছে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে দুইটি আউটডোর গেম এবং দুইটি ইনডোর গেমের জন্য টিম গঠন করবে। শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক টিম লিডারের দায়িত্ব পালন করবেন। যে প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষক নেই সে প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান প্রধান ১ জন নির্দিষ্ট শিক্ষককে দায়িত্ব দেবেন। টিম লিডারের মোবাইল নম্বরসহ সব টিমের তালিকা শিক্ষা অধিদপ্তরের শারীরিক শিক্ষা বিভাগে প্রেরণ করতে হবে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে শারীরিক শিক্ষা বিভাগ থেকে টিম গঠনের জন্য সুনির্দিষ্ট ফরম পাঠানো হবে। দাবার জন্য আলাদা টিম বা দল গঠন করতে হবে।
ফুটবল, হ্যান্ডবল, কাবাডি, ক্রিকেট বাস্কেটবল ভলিবল হবি ও রাগবি টিম গঠনের বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রতিটি দলগত খেলায় আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী খেলোয়াড় এবং অতিরিক্ত খেলোয়াড় নিয়ে টিম গঠন করতে হবে। ছেলে ও মেয়েদের আলাদা টিম গঠন করতে হবে। প্রতিটি দলের অধিনায়কের নামসহ খেলোয়াড়দের নামের তালিকা পাঠাতে হবে।
ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস ও আর্চারি টিমগঠনের নির্দেশনা বলা হয়েছে, একক এবং দ্বৈত নৈপুণ্যের খেলায় টিমগঠন করতে হবে। একক ও দ্বৈত খেলোয়াড়ের নামের তালিকা পাঠাতে হবে অধিদপ্তরে।
৩৫ ইভেন্টর অ্যাখলেটিকস্, ১১ ইভেন্টের সাঁতার, তায়কোয়ান্দো, সাইক্লিং টিম গঠনের একক, দ্বৈত ও দলগত টিম গঠন করতে হবে। ছেলে-মেয়েদের আলাদা টিম গঠন করতে হবে। ছোট, মধ্যম ও বড় গ্রুপে বিভক্ত করে টিম গঠন করতে হবে। একক দ্বৈত ও দলগত টিমের তালিকা অধিদপ্তরে পাঠাতে হবে।
দাবা দল গঠনের বিষয়ে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতিটি ক্লাসে ছেলে ও মেয়েদের আলাদা দাবা খেলোয়াড়ের নাম পাঠাতে হবে। ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম ছেলেমেয়ে এবং ৯ম ও ১০ম শ্রেণির ছেলে মেয়ে যারা দাবাখেলায় উৎসাহী তাদের নামের তালিকা পাঠাতে হবে।
নির্দেশনার আরও বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের সারা বছরের ক্রীড়া কর্মসূচি প্রণয়ন করে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ বিষয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের শারীরিক শিক্ষা বিভাগ পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
অধিদপ্তর আরও বলছে, সারাদেশের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষকদের একটা ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে। এ জন্য লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা এলএমএস সমৃদ্ধ একটি ওয়েবসাইট করে শিক্ষকদের যুক্ত করতে হবে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সরাসরি শিক্ষার্থীদের শরীরচর্চা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষাদান, প্রশিক্ষণ প্রদান করা যাবে। এছাড়াও প্রায় ৩০ হাজার শারীরিক শিক্ষার শিক্ষককে অনলাইন রিফ্রেসার কোর্স এবং বিভিন্ন খেলার কোচ হওয়ার প্রশিক্ষণ প্রদান করা যাবে। এ বিষয়ে একটি তথ্য ফরম পাঠানো হবে। যা পূরণ করে শারীরিক শিক্ষা বিভাগে পাঠাতে হবে।
অধিদপ্তর আর বলছে, প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কাউট দল, রোভার স্কাউট বিএনসিসি এবং গার্লসাইড দল গঠন করে নিয়মিত কার্যক্রম অব্যাহত রাখাতে হবে।
অধিদপ্তর থেকে পাঠানো নির্দেশনায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সব উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষ অফিস ও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।