শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং প্রতিরোধ নীতিমালা চূড়ান্ত করার সভা পেছালো

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বুলিং প্রতিরোধ নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করার সভা পিছিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী বৃহস্পতিবার দুপুরে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল বুধবার এ সভা আয়োজনের কথা থাকলেও তা পেছানো হলো। 

মঙ্গলবার বিষয়টি জানিয়ে নোটিশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ নীতিমালার খসড়াটি চূড়ান্ত করতে বুধবার সভা ডেকেছিলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু সে সভা পেছানো হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের জারি করা সভার নোটিশে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য সভাটি ১৮ জানুয়ারির পরিবর্তে ১৯ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং প্রতিরোধ নীতিমালার খসড়ায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের হেয় বা তাদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক করলে শাস্তি হবে শিক্ষক-কর্মচারীদের। শিক্ষার্থীদের হেয় করা বা বুলিং-র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকলে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও বাতিল হবে। তাদের বরখাস্ত করা হবে। সরকারি স্কুল বা কলেজ শিক্ষকদের কেউ এমন কাজে জড়িত থাকলে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা বা প্রচলিত আইনে তাদের শাস্তি হবে। আর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির কোনো সদস্য শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিং করলে পদ হারাবেন এবং কমিটি বাতিল করা হবে। আর সহপাঠীকে র‌্যাগিং বা হেয় করলে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার হবেন। 

নীতিমালা খসড়া বুলিং বা র‌্যাগিংয়ের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষতিকর বা বেদনাদায়ক এবং আক্রমণাত্মক ব্যবহার, যা যার প্রতি করা হয় তার নিজেকে তা হতে রক্ষা করা কষ্টকর হয়ে যায়। বুলিং-র‌্যাগিং শারীরিক বা মানসিক হতে পারে, একজন অথবা দলবদ্ধভাবে করতে পারে। ব্যঙ্গ করে নাম ধরে ডাকা, বদনাম করা, লাথি মারা, বিভিন্ন ধরনের কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি করা বা উত্যক্ত করা, এমনকি অবহেলা বা এড়িয়ে চলে মানসিক চাপ দেয়া বুলিং-র‌্যাগিংয়ের পর্যায়ে পড়ে। শুধুমাত্র সহপাঠী বা শিক্ষার্থী নয় শিক্ষক বা অভিভাবকদের দ্বারাও বুলিং বা র‌্যাগিং হতে পারে। যেসব শিক্ষার্থী এর শিকার হয় তাদের মধ্যে বিষন্নতা, ভীতসন্ত্রস্ততা, খিটখিটে মেজাজ এবং নিজেকে হেয় করে দেখার প্রবণতা তৈরি হয়। 

র‌্যাগিংয়ের শাস্তি নিয়ে নীতিমালার খসড়ায় বলা হয়েছে, বুলিং বা র‌্যাগিংয়ে কোনো শিক্ষক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দের সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার পরিপন্থী হবে এবং তা শাস্তিমূলক অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরণের অভিযোগের জন্য তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা-২০১৮ এর আওতায় অসদাচরণের অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। যাদের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা বা সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা-২০১৮ প্রযোজ্য নয়, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী আইনে কিংবা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। 

খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এমপিও স্থায়ী-অস্থায়ীভাবে বাতিল করা যাবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে তাদেরকে স্থায়ী-অস্থায়ীভাবে অপসারণ বা বরখাস্ত করা যাবে। নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে তাদেরকে স্থায়ী-অস্থায়ীভাবে অপসারণ বা বরখাস্ত করা যাবে এবং ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় দায়ী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফৌজদারী মামলা দায়ের করা যাবে। শিক্ষার্থীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে বুলিং-র‌্যাগিংয়ের ধরন ও গুরুত্ব অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ তাদের সাময়িক বা স্থায়ী বহিষ্কার করবেন। বুলিং বা র‌্যাগিংয়ে গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং বা অ্যাডহক বা বিশেষ কমিটির কোনো সদস্যের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকলে বোর্ডের তদন্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে কমিটির সদস্য পদ থেকে তাকে অপসারণ করা যাবে বা সংশ্লিষ্ট কমিটি বাতিল করা যাবে। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব (লিংক যাবে) করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033519268035889