জাতীয় শিক্ষাক্রমে আরবি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইসলামিক থট (বিআইআইটি) নামে একটি সংগঠন। শিক্ষাব্যবস্থার সংকট নিরসনে শিক্ষাসংস্কার কমিশন গঠনের ও শিক্ষকদের উপযুক্ত বেতন ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে তারা।
সোমবার (৭ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।
বিআইআইটির মহাপরিচালক ড. এম আবদুল আজিজ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে বহু শিক্ষানীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা ছিল শাসকগোষ্ঠীর চিন্তা-চেতনাকে সাধারণ জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়াস। এসব নীতিতে দেশের সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, ও দর্শনকে যথাযথভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এর ফলে পাঠ্যক্রমে খেয়ালখুশিমতো পরিবর্তন, রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় এবং অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে শিক্ষাব্যবস্থা প্রায় ধ্বংসের পথে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ মানবিকতা, যুক্তিবাদ, অসাম্প্রদায়িকতা, এবং দেশপ্রেমের আদর্শ তুলে ধরা হলেও তা বাস্তবে কার্যকর হয়নি, বরং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সমন্বয়হীন একটি সেকেলে শিক্ষা ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলে নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়া হলেও, তার বাস্তবায়নও সফল হয়নি। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে চালু করা জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা নীতিনির্ধারণে অদূরদর্শিতার ও জাতিসত্তার সাথে সাংঘর্ষিক উপাদান থাকায় এটিও ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়াও উচ্চ শিক্ষার লক্ষ্যে বিগত সরকারের গৃহীত সংশোধিত কৌশলগত কর্মপরিকল্পনার (২০১৮-২০৩০) ক্রিটিক্যাল রিভিও প্রয়োজন। নতুন বাংলাদেশের নতুন অধ্যায়ে শিক্ষাব্যবস্থার পুনর্গঠনের মাধ্যমে একটি শিক্ষিত, নৈতিক, এবং দক্ষ প্রজন্ম গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার।
শিক্ষা সংস্কারে বেশ কিছু সুপারিশও তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে— শিক্ষায় যেকোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শহর-গ্রামীণ ভেদাভেদ দূর করা, শিক্ষকদের উপযুক্ত বেতন ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করা, পাঠ্যক্রমে জীবনমুখী দক্ষতা এবং বিষয়ভিত্তিক, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের যথাযথ সমন্বয় নিশ্চিত করা, কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সম্প্রসারণ, গবেষণা কার্যক্রম এবং শিক্ষা মানোন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট চালু করা ইত্যাদি।