আমাদের বার্তা প্রতিবেদক: ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের ছুটির সঙ্গে অতিরিক্ত সাত দিন ছুটি শেষে আজ রোববার খুলেছে স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। একইসঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ৪ মে থেকে প্রাথমিক বাদে শনিবারও শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া অবধি প্রাক-প্রাথমিক বন্ধ থাকবে।
এর আগে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার কখা বিবেচনায় নিয়ে গত ২০ এপ্রিল স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরিসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাত দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়। গতকাল শনিবার সে ছুটি শেষ হয়। যদিও তৃতীয় দফায় আরো তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এপ্রিল মাসজুড়ে তাপ প্রবাহ কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোও আজ খুললেও কমিয়ে আনা হয়েছে ক্লাসের সময়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্লাস কার্যক্রম চলবে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। গতকাল শনিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আক্তারুন্নাহার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, চলমান দাবদাহের কারণে শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টারগুলোর শ্রেণি কার্যক্রম চালুর বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, এক শিফটে পরিচালিত বিদ্যালয়ে সকাল ৮টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ক্লাস চলবে। দুই শিফটে পরিচালিত বিদ্যালয়ে ১ম শিফট সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা এবং দ্বিতীয় শিফট সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রেরিত রুটিন বিবেচনায় নিয়ে উপজেলা ভিত্তিক শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সাপ্তাহিক রুটিন প্রণয়ন করবেন।
এদিকে, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। আর দাবদাহ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে।
অন্যদিকে, ৪ মে থেকে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শনিবারও ক্লাস চলার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল
থাকছে। শনিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আক্তারুন্নাহার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়।
এতে বলা হয়, গত ২৫ এপ্রিল পৃথক দুই প্রজ্ঞাপনে স্কুল, কলেজ, মাদরসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪ মে থেকে শনিবারও শ্রেণি চালু থাকার কথা জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতরসহ বেশ কয়েকটি ছুটির সমন্বয়ে অন্তত টানা ২৬ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো। গত ২৬ মার্চ দেশের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছুটি শুরু হয়। এর একদিন আগে ২৫ মার্চ কলেজগুলো ছুটিতে দেয়া হয়েছিলো। আর প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসায় ছুটি শুরু হয় ২২ মার্চ। গত ২১ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ ছিলো। কিন্তু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বয়ে যাচ্ছে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। প্রতিদিনেই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে গরমের তীব্রতা। তীব্র গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহে গরম আরো বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় শুক্রবার তিন দিনের জন্য হিট অ্যালার্ট জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অভিভাবকদের পক্ষ থেকেও চলমান তাপদাহ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার দাবি ওঠে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মকালীন ছুটি এগিয়ে আনারও দাবি করেন অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে দুই মন্ত্রণালয় ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে নতুন করে আর ছুটি বাড়ানো হয়নি।