এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় কমিটি প্রথা বাতিল, গত ১৬ বছরে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত ও নির্যাতিত সব শিক্ষককে স্বপদে পুনর্বহাল এবং পাঠ্যবই সংস্কার কমিটিতে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের অর্ন্তভুক্তির দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি ও বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের নেতারা।
শিক্ষাঙ্গনে কোনো রাজনীতি চলবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষক নেতারা। এ ছাড়াও বেতন বৈষম্য, দ্বিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা বাদ দেয়া, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের অডিট রিপোর্টের ভোগান্তি নিরসন, দলীয় প্রভাবমুক্ত শিক্ষক, শিক্ষক নির্যাতন, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও ঘুষ কারবার বন্ধ করা, শিক্ষকদের আইসিটি জ্ঞান বাড়ানো, নির্যাতিত শিক্ষকদের খোঁজ নেয়াসহ নানা বিষয় উঠে এসেছে প্রায় ৪০ জন শিক্ষক নেতার আলোচনায়।
শিক্ষার জন্যে আমাদের শিক্ষক প্রয়োজন, বিশ্বব্যাপী শিক্ষকের অভাব মোকাবিলা- শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর মগবাজারে শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম অডিটোরিয়মে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ ইসহাক হোসেন। মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারার এবং দৈনিক শিক্ষাডটকম ও আমাদের বার্তার প্রধান উপদেষ্টা সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান। গোলটেবিল বৈঠক শেষে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে কেক কাটা হয়।
অ্যধাপক মাজহারুল হান্নান বলেন, পাঠদান করান শিক্ষকরা আর বেতন-ভাতা দেয় সরকার, তাহলে পরিচালনা কমিটির দরকার কেন? যুগ যুগ আগে যখন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় কমিটির সদস্যরাই সর্বাত্বক ভূমিকা রাখতেন। কিন্তু বিগত কয়েকবছরে পরিচালনা কমিটির কাজই হলো প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের ব্যবসা ও রাজনীতির কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা। এসব বন্ধ করার এখনই সময়।
বক্তারা বলেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো পাঠ্যবই যারা পড়াবেন সেইসব শিক্ষকরা সংস্কার কমিটিতে নেই। শিক্ষক সমাজের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের পাঠ্যবই সংস্কার কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত করতে হবে। শিক্ষক সংগঠনগুলোকে যোগ্য নেতৃত্ব বেছে নিতে হবে।
এ ছাড়াও বক্তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। সকালে এক কমিটি আর বিশেষ ব্যক্তিদের সুপারিশে বিকেলে আরেক কমিটি দিয়ে বির্তক সৃষ্টি বন্ধ করার দাবি জানান।
এ ছাড়াও বক্তারা বলেন, বিগত দিনে শিক্ষকরা দলবাজিতে মগ্ন ছিলেন। তাদের এই দলবাজি বন্ধ করতে হবে। তারা বলেন, টাকার বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষক দেয় কমিটি, যোগ্য শিক্ষকরা বঞ্চিত থাকে-এই পদ্ধতি চলতে দেয়া হবে না।
গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যক্ষ রেজাউল কবির, অধ্যক্ষ সাহিদুন নাহার, ইলিম মোহাম্মদ নাজমুল হোসেন, সৈয়দ মোহাম্মদ ইউসুফ সুমন, আনোয়ার হোসেন মন্ডল, অধ্যক্ষ হোসেন জাহান, অধ্যক্ষ জহিরউদ্দিন আজম, অধ্যক্ষ রফিকা আফরোজ, অধ্যক্ষ এমএ মোনোয়েম, কানিজ সালমা, আল মামুন, মো. আমিনুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, মো. ইউনূস মিয়া, কামরুজ্জামান খান, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।