শিক্ষার অনেক গুণগত পরিবর্তন এসেছে, ফল ভবিষ্যতে দেখবো: শিক্ষামন্ত্রী

দৈনিকশিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিকশিক্ষাডটকম ডেস্ক : শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, আমাদের সন্তানদেরকে শুধুমাত্র ফলাফল দিয়ে যাতে মূল্যায়ন না করি। তাদের নানা ধরণের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নেয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। উন্নত বিশ্বে দেখবেন, যতবড় পরিবারেরই হোক না কেন ১৮/১৯ বছরের বয়সের সন্তানদের মাঠে-ঘাটে এবং দোকানে কাজ করার ক্ষেত্রেও উৎসাহিত করেন অভিভাবকরা। আমাদের মধ্যেও এই মানসিকতা আসতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হবে তা ঠিক নয়, তাদের কর্মমুখী দতক্ষতাগুলোও অর্জন করতে হবে।

তিনি বলেন, গত পাঁচবছরে শিক্ষার অনেকগুলো গুণগত পরিবর্তন এসেছে। সেগুলোর ফল আমরা আগামীতে দেখব। শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ফলগুলো দৃশ্যমান হয় দেরিতে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আজকে আমাদেরকে অনেক পেছন থেকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।     

শনিবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমাদের এই প্রজন্মকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার অনেক স্বপ্ন। এই প্রজন্মকে উন্নত বিশ্বের আদলে শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত করা এবং তাদেরকে কর্মমুখী করাটা আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের শিক্ষার্থীরা আইসিটিতে এখন অনেক কোর্স করতে পারে।

বর্তমান শিক্ষা পদ্ধতির জনপ্রিয়তা ও অজনপ্রিয়তার বিতর্কে যেতে চান না জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব দিয়েছেন আমাদেরকে অজনপ্রিয় কাজও যদি সঠিক হয়, শিক্ষাবিদ-বিশেষজ্ঞগণ সবাই মিলে যেটা নির্দিষ্ট করেছেন, সেটার দায়িত্বটা আমাদের নিতে হবে। আসলে আমরা রাজনৈতিক নেতৃত্ব সেই কাজের জন্যই এসেছি। রাজনৈতিক নেতৃত্বের শুধু জনপ্রিয়তা খুঁজলে চলবে না, অজনপ্রিয় হলেও সঠিক সিদ্ধান্তের জায়গায় আমাদেরকে স্থির থাকতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সব শিক্ষার্থীকে বায়োলজি, এনাটমি পড়ানোর প্রয়োজন নেই, বর্তমান প্রসেসটা হচ্ছে সেটাই, যেই শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ারিং বা মেডিকেলে যাবে তাকে সেই নির্দিষ্ট পর্যায়ে গিয়ে আমি সেটা পড়াব। সেজন্য আমরা ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ে স্পেশালিস্ট স্ট্রিমটুকু রাখছি। সকলের জন্য নির্ধারিত মানদ-ের বিজ্ঞান ও সমাজ বিজ্ঞান, ভাষাজ্ঞান, গণিতের ওপর একটা বয়সসীমা পর্যন্ত থাকতে হবে, সেইভাবেই স্ট্রাকচার করা।

তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে কিনা, সেই চিন্তার কোন কারণ নেই। আমাদের এসএসসি এবং এইচএসসি পাশ করার পরও তো  বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছে। অর্থাৎ বোর্ডের রেজাল্টের ওপর তার শতভাগ আস্থা নেই। সুতরাং আমরা কিন্তু সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর কাজ করছি। স্পেশালিস্ট স্ট্রিমে যারা যাবে তারা যাতে সেই স্ট্রিমগুলো পছন্দ করতে পারে সেভাবে এলাইন করা হয়েছে।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, একসময় আমরা স্মার্টফোন চালানো জানতাম না। কিন্তু আমাদের মানসিকতাটা ছিল আমরা সেটা পরিচালনা করতে শিখব এবং অনেকে পরিণত বয়সে এসেও স্মার্টফোন চালানোটা শিখেছি। এই যে মানুষের মাঝে নতুন কিছু শেখার দক্ষতা ও মানসিকতা যাতে থাকে সেইভাবে পরিচালিত করতে হয়। আমাদের শিক্ষার্থীদেরও যাতে আমরা সেই পথে পরিচালিত করতে পারি, এজন্য আমাদের রাজনৈতিক একটা সিদ্ধান্ত আছে।

তিনি বলেন,  এখানে আমার কি চাওয়া সেটার চাইতে শিক্ষা পরিবারের মধ্যে আমরা সবাই মিলে কি পারব, সেটিই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি যে মিশনটা নিয়ে আসছি, সেটা হচ্ছে শুধুমাত্র রাজনৈতিক দর্শন। যেহেতু আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী, আমার দল আমাকে সেই দর্শনটা দিয়ে শিক্ষা প্রশাসনে সেটাকে বাস্তবায়নের জন্য পাঠিয়েছে। এবারে আমাদের নির্বাচনী ইশতাহারে যেই দর্শনটা, সেটা হচ্ছে আমরা শিক্ষাটাকে এমনভাবে সাজাতে চাই, শিক্ষার্থীদের এমনভাবে প্রস্তুত করতে চাই, যাতে আমাদের দেশে এবং বিশ্বে যে ধরণের কাজ সৃষ্টি হচ্ছে, সেই ধরণের কাজের জন্য দক্ষ করে গড়ে তোলা। যেখানে তারা নতুন দক্ষতা শেখার মানসিকতা রাখে। শিখতে শেখার মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, কলিম সরওয়ার, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী, সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তাক আহমদ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি রুবেল খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক।

সূত্র : বাসস


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা - dainik shiksha শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি - dainik shiksha দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস - dainik shiksha ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029759407043457