‘শিক্ষায় অনগ্রসর এলাকাকে আলোকিত করতে ১৫ বছর আগেও আমি কিছু বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলাম। এমপিওভুক্ত হওয়ার পরও আমি সেই উদ্যোগ বহাল রেখেছি শুধুমাত্র শিক্ষক, ছাত্র ছাত্রী এবং অভিভাবকদের স্বার্থে।’
কথাগুলো বলছিলেন টাঙ্গাইলের কালিহাতির লায়ন ফেরদৌস আলম ফিরোজ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি লায়ন ফেরদৌস আলম ফিরোজ।
বিশেষ উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ক্লাস নেয়ার পর মাসিক কিছু ক্লাস কলেজের শিক্ষকরাই নিয়ে থাকেন। যাতে বাইরে কোচিং করার প্রয়োজন না হয়। এতে করে অভিভাবকদের কোচিংয়ের জন্য আলাদা টাকা দিতে হয় না। আর শিক্ষকরা বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন।
তিনি আরো বলেন, বাড়তি ক্লাস করানোর জন্য অভিভাবক মহল থেকে বেশ সাড়া পাওয়া যায়। কারণ মাদকের ভয়াল থাবা শুধু শহরে নয়, গ্রামেও বেশি। সেদিক থেকে বাড়তি ক্লাস দিয়ে তাদের পড়ামুখী রাখার চেষ্টা করা। এতে অভিভাবক খুব খুশি এবং নিশ্চিত থাকেন।
ফেরদৌস আলম ফিরোজ বলেন, যদি কিছু টাকার বিনিময়ে আমার কলেজে কোচিং করানো হতো তাহলে হয়তো সরকারি নিয়ম মানা হচ্ছে না বলা হতো না। কিন্তু কোনো ধরণের টাকা ছাড়া ক্লাসের নিয়মেই অন্যান্য দিনের মতো বাড়তি ক্লাস নেয়ার জন্য সে প্রশ্ন আসেনি।
রোজার ছুটির মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষার নেয়ার বিষয়ে অধ্যক্ষ শাহজাহান কবির বলেন, গত ২৩ মার্চ থেকে সরকারি-বেসরকারি হাইস্কুল এবং কলেজে শুরু হয়েছে রমজানের ছুটি। এই ছুটির নিয়মের বাইরে আমরা কোনো ক্লাস নেইনি। সরকারি নিয়মে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের ভেতরে শিক্ষার্থীদের বাড়তি ক্লাস করিয়েছি। এটাতো অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে যাতে বাইরে কোচিং করতে না হয়। এটাই কলেজের বিশেষত্ব। এছাড়াও অভিভাবকদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা এই বাড়তি ক্লাস নেই।
লায়ন ফেরদৌস আলম ফিরোজ কলেজের একাধিক অভিভাবক জানান, বাড়তি ক্লাসে আমাদের সুবিধা হয় অনেক। নিশ্চিত মনে কাজ করতে পারি। এছাড়াও ছেলেকে আলাদা করে কোচিং করানো সামর্থ্য নেই।
কলেজে শিক্ষার্থীদের জোর করে ক্লাস ও পরীক্ষায় উপস্থিতি হতে বাধ্য করার বিষয়ে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, সন্তানের ভালো হবে এমন কাজে আমাদের জোর করতে হবে কেনো। এটাতো আমরাই চাই।
এলাকাবাসী জানান, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা যদি এই এলাকায় স্কুল, কলেজে না করতেন তাহলে এখানে সন্ধ্যার পর আলো দেখা যেত না। উনার জন্য এই এলাকার অনেকের ছেলে মেয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে। যারা অভাবে সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারেন না এই কলেজে তাদের দায়িত্ব নেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ফিরোজ আলম।
উল্লেখ্য, ১৫ জন শিক্ষকদের নিয়ে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে এমপিওভুক্তি হয় প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে ৩২ জন স্টাফ নিয়ে চলছে কলেজটি।