শিক্ষাসফরের নাম করে দুই দিন বন্ধ রাখা হয় বাউফল কালিশুরী ডিগ্রি কলেজ। এর পর কলেজের টাকায় শিক্ষার্থী ছাড়াই আনন্দভ্রমণে গেছেন অধ্যক্ষের নেতৃত্বে ৫৬ সদস্যের একটি দল। শিক্ষাসফরে এমন আনন্দভ্রমণ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনায় পড়েন কলেজ শিক্ষকরা।
জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে অধ্যক্ষ মো. নেছার উদ্দিন ওরফে জামাল সিকদারের নেতৃত্বে শিক্ষকরা কলেজ থেকে বের হয়ে যান। এর পর যে যার মতো পরিবার-পরিজন নিয়ে বরিশাল পৌঁছান। সেখান থেকে পরদিন মঙ্গলবার ভোরে বাসে করে ৫৬ সদস্যদের একটি দল সিলেটের উদ্দেশে রওনা হন।
এক শিক্ষক বলেন, সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরি করার জন্য পাঁচ দিন তাদের ওই এলাকায় অবস্থান করার কথা রয়েছে। তাদের সঙ্গে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ হাওলাদার অংশগ্রহণ করলেও পরিচালনা কমিটির কোনো সদস্য অংশগ্রহণ করেননি। গতকাল বুধবারও কলেজ বন্ধ ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, জনপ্রতি প্রত্যেক শিক্ষকের সাত হাজার টাকা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে চার হাজার টাকা কলেজের তহবিল থেকে ব্যয়ভার বহন করা হবে।
কয়েক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের টাকায় স্যারেরা আনন্দভ্রমণে গেছেন। যেহেতু কলেজ বন্ধ দিয়ে গেছেন, আমাদেরও নিতে পারতেন। আমরাও টাকা দিয়ে যেতাম।
এক অভিভাবক বলেন, কলেজের তহবিল মানেই শিক্ষার্থীদের টাকা। সেই টাকায় শিক্ষার্থী ছাড়া কলেজ বন্ধ দিয়ে শিক্ষকরা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দভ্রমণে যায়। এটা খুবই দুঃখজন। সরকারি কোনো কর্মকর্তা কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি থাকলে অধ্যক্ষ এমন কাজটি করতে পারতেন না।
আনন্দভ্রমণের বিষয়ে অধ্যক্ষ মো. নেছার উদ্দিন বলেন, ‘এটা শিক্ষাসফর। শিক্ষার্থী ছাড়া শিক্ষা সফর হয় কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বলা হয়েছে তারা আসেনি। আর কলেজ পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ শিক্ষাসফর করা হয়েছে।’
কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ হাওলাদার বলেন, ‘আমাকে বলেছে শিক্ষাসফর। শিক্ষার্থী ছাড়া শিক্ষাসফর হয় কিনা? এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দেখতে আছি বলে তিনি ফোন কেটে দেন।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষাসফরে যাওয়ার সুযোগ আছে। শিক্ষকরা আনন্দভ্রমণে গেছেন কিনা? তা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’