শিক্ষার্থী সংকটে অর্ধশতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

ঝালকাঠি প্রতিনিধি |

ঝালকাঠি জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৮৪টি। এরমধ্যে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে শিক্ষার্থী সংকট। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় জানিয়েছে, জেলায় ৬৪টি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫০-এর কম। 

সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুরে শিক্ষার্থী সংকট লক্ষ করা গেছে। সদর উপজেলার ৭২ নম্বর ছত্রকান্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কাগজ-কলমে ৩৫ জন। এখানে প্রতিদিন গড় উপস্থিতির সংখ্যা ২০-২৫ জন।

রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের ৭৮ নম্বর চরখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিকে একজন এবং অন্যান্য শ্রেণি মিলিয়ে শিক্ষার্থী পাঁচজন। 

গালুয়া ইউনিয়নের ৪৪ নম্বর মধ্য কানুদাসকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রেজিস্টারে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৬ জন। কিন্তু গড়ে এখানে ৭ থেকে ১২ জনের উপস্থিতি দেখা যায়। প্রতিষ্ঠানটিতে ৫ জন শিক্ষক ও একজন কর্মচারী কর্মরত আছেন।

একইভাবে শিক্ষার্থী সংকট রয়েছে উপজেলার ৮ নম্বর দক্ষিণ-পূর্ব তারাবুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৭৯ নম্বর হালদারখালী তারাবুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এ বিদ্যালয় দুটিতে ছাত্রছাত্রীদের গড় উপস্থিতি ২০ থেকে ২২ জন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ৫০ কিংবা তার কমসংখ্যক শিক্ষার্থী রয়েছে এমন প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর একটি তালিকা তৈরি করেছে। সেই তালিকায় ৫০-এর কম শিক্ষার্থী রয়েছে কাঁঠালিয়া উপজেলার ২৭টি বিদ্যালয়ে। আর রাজাপুর, নলছিটি ও ঝালকাঠি সদরে এমন প্রায় ৪০টি বিদ্যালয় রয়েছে।

শিক্ষকরা বলছেন, তাদের বিদ্যালয়ের কাছাকাছি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকা, মহাসড়কের পাশে বিদ্যালয় হওয়ায় রাস্তা পারাপারে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি, গ্রামের বিদ্যালয়গুলোতে যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংকট দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম হওয়ায় অনেক সময় ক্লাসরুমে পাঠদানে অনীহা তৈরি হয় যার প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের ওপর। তবে শিক্ষার্থী বৃদ্ধির জন্য শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থী সংগ্রহ, মা সমাবেশসহ শিক্ষার্থী বাড়ানোর জন্য নানামুখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

৭৯ নম্বর হালদারখালী তারাবুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শওকত উদ্দিন সাগর বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে দেড়শতাধিক ছাত্রছাত্রী ছিল। গত বছর বিদ্যালয়ের এক কিলোমিটারের মধ্যে একটি মাদ্রাসা ও একটি কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় আমাদের শতাধিক ছাত্রছাত্রী সেখানে চলে গেছে। এজন্য আমরা শিক্ষার্থী সংকটে পড়েছি। যারা আছে তাদের প্রত্যেকেরই বাড়ি বিদ্যালয়ের আশপাশে।

সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, প্রাথমিকে শিক্ষার্থী সংকট একটি জাতীয় পর্যায়ের সমস্যা। জেলায় ৫০-এর নিচে শিক্ষার্থী থাকা বিদ্যালয়গুলোর তালিকা করে গত ৩০ মার্চ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থী সংকটে আমাদের শিক্ষকদের ব্যর্থতা তো আছেই। বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সবার সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

শিক্ষার্থী কম থাকা বিদ্যালয়গুলোর তালিকা গত ৩০ মার্চ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025930404663086