টাঙ্গাইলের সদর উপজেলায় অবস্থিত বরুহা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফ হোসেনের নানা অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন এনে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে ক্লাস বর্জন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে। কেনো এতো দিন ধরে ক্লাস বর্জন করছে জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা জানায়, এই বিদ্যালয়ে কখনোই মেয়েদের বেতন নেয়া হয় না। কিন্তু এই বছর প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফ হোসেন মেয়েদের থেকে বেতন নেয়ার জন্য অন্যান্য শিক্ষকদের জোর করেন। আমরা বেতন দেবো না বলায় প্রধান শিক্ষক মেয়েদের ছাড়পত্র দিয়ে দিবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অনেক রকম দুর্নীতির অভিযোগ আছে।
এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, এই কথা সত্য। আমরা বেসরকারি বেতন নেবো না তবুও যেনো মেয়েদের বেতন না নেয়া হয়, কিন্তু প্রধান শিক্ষক মরিয়া হয়ে উঠেন। যে কারণে তিনি শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কিছুটা বাজে আচরণও করেন।
এদিকে গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক এবং বেশ কিছু শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কাছে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে একটি লিখিত আবেদন জমা দেয়। সে সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এলাকায় প্রধান শিক্ষক অবস্থান করছিলেন। এক পর্যায়ে শিক্ষাথীদের সঙ্গে দেখা হলে প্রধান শিক্ষক তাদের গুলি করে মারার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে একাধিক শিক্ষক বলেন, উনি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের আশপাশে ঐদিন ছিলেন না বলে দাবি করেছেন। কিন্তু আমাদের শিক্ষার্থীদের কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে যেখানে তাকে দেখা গেছে।
মেয়েদের বেতন নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফ হোসেন জানান, বেতন নেয়ার কথা বলা হলেও শিক্ষার্থীদের চাপে পরবর্তীতে আগস্ট মাসের ২৬ তারিখ রেজুলেশন করে তা বন্ধ রাখা হয়।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এলাকায় শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ঐদিন কাজে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এলাকায় যাই। কিন্তু দূর থেকে শিক্ষার্থীদের দেখে আমি চলে যাই। ঠিক তখনই কিছু শিক্ষার্থী আমাকে পেছন থেকে ডাকলে আমি ফিরে তাকাই কিন্তু না দাঁড়িয়ে আমি চলে যাই।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মুজিবুল হক আহসান বলেন, আগামীকাল এই বিষয়ে আমি তদন্ত করতে বিদ্যালয়ে যাবো। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে আমাকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।