প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষা শিক্ষার মূল ভিত্তি। আপনারা উদ্যোগী মনোভাব নিয়ে সহযোগিতা করবেন যাতে করে আমরা সুশিক্ষিত জাতি উপহার দিতে পারি।
সোমবার উপদেষ্টা রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ‘রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের গুণগতমান বিকাশের জন্য আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রাথমিক শিক্ষার বিকাশে সহায়তা করবেন-তাহলে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন ঘটবে। চর অঞ্চলের জন্য চরভাতা চালু করার চেষ্টা করা হবে।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. শহিদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. আজিজুর রহমান অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা বলেন, পর্যায়ক্রমে সকল প্রাথমিক স্কুলে মিড ডে মিল চালুর ব্যবস্থা করা হবে। এ সংক্রান্ত প্রকল্প একনেকে পাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন, স্কুলের খেলার মাঠ যেনো দখল হয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নদী তীরবর্তী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার সরকারি প্রাইমারি স্কুল ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিভাগীয় উপ-পরিচালককে নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা আরো বলেন, বেশ ভালো সংখ্যক স্কুলে ওয়াশব্লক রয়েছে। সেগুলো ভালোমতো মেইনটেইন করা দরকার। এলজিইডির কাজের মান আরো ভালো করতে হবে। দীর্ঘসূত্রতা, দুর্নীতি এগুলো ক্রনিক প্রবলেম। আগে বইয়ের মান খারাপ ছিলো-এটা সামগ্রিক দুর্নীতির প্রতিফলন। এবার বইয়ের মান ভালো হবে। শিক্ষকসহ অন্যান্য নিয়োগের ক্ষেত্রে সাইকোলজি টেস্ট এর ব্যবস্থা থাকা দরকার। প্রাথমিক স্কুলে চাকরিজীবীর সংখ্যা মোট সরকারি চাকরির এক চতুর্থাংশ। তাদের সুযোগ সুবিধা, বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে বাজেটের প্রশ্ন জড়িত। শিক্ষা খাতে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম বরাদ্দ বাংলাদেশে।
উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ অনেক স্থানে সুন্দর স্কুল আছে, ছাত্র নাই। কোথাও ছাত্র কম, শিক্ষক বেশি। রংপুর অঞ্চলের ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ২৪:১। এটা খুব ভালো। রংপুর বিভাগে সব স্কুলে একরকম না । শিক্ষকের ভূমিকা আরো ভালো হওয়া উচিত।
শিক্ষকের নিয়োগ হয় উপজেলা ভিত্তিতে। শর্ত থাকে নিজ এলাকায় থাকবে। কিন্তু কিছুদিন পরে বদলির তদবির করতে থাকেন। শিশুরা স্কুলে যাওয়ার আগেই তারা মাতৃভাষা আয়ত্ত করে। মাতৃভাষা লিখতে, পড়তে পারে, বলতে পারে, গণিতের ভাষা বুঝতে পারে-এভাবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, প্রাথমিকের সফলতা হলো অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীকে স্কুলে নিতে পারছি, ঝরে পড়া কমছে। ব্যর্থতা হল পঞ্চম শ্রেণির পাশ করার পর ৫০ ভাগ বাচ্চা সঠিকভাবে লিখতে, বলতে ও পড়তে পারে না, গণিত করতে পারে না।
উপদেষ্টা পরে একই স্থানে ‘মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময়’ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন।