শিক্ষার্থীদের দিয়ে উকুন তোলান-বাতাস করান প্রধান শিক্ষিকা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি |

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ফুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আনোয়ারা ইয়াসমিন শ্রেণিকক্ষেই শিক্ষার্থীদের দিয়ে মাথায় উকুন বাছাই ও কপাল টিপানো ছাড়াও হাতপাখার বাতাস করিয়ে নেন বলে অভিযোগ উঠছে। শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তার এমন আচরণের কারণেই ওই স্কুলের শিক্ষাকার্যক্রম এখন নাজুক অবস্থায় রয়েছে।  

জানা গেছে, ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করা হয় ফুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক স্কুল। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৪ জন শিক্ষক রয়েছেন। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনায় প্রধান শিক্ষিকা আনোয়ারা ইয়াসমিন কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কাই করেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

শ্রেণিকক্ষেই বেঞ্চের ওপর শুয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের দিয়ে উকুন তোলা ও মাথা-কপাল টিপিয়ে নেন। এছাড়াও তার আরাম-আয়েশের জন্য মাঝে মধ্যে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে হাতপাখার বাতাস করান। তার এমন কাজে কোনো শিক্ষার্থী অপারগতা দেখালে মানসিক নির্যাতন চালিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।ক্লাসের সময় স্কুল-সংলগ্ন এলাকায় গাছের ছায়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকেন প্রধান শিক্ষিকা।

শিক্ষাবহির্ভূত এমন কর্মকাণ্ড ছাড়াও মাঝে মাঝে ক্লাসের সময় প্রধান শিক্ষিকা স্কুল-সংলগ্ন এলাকায় গাছের ছায়ায় পাটি পেড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকেন। এ ছাড়াও অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষিকা নিয়মিত স্কুলে আসেন না। কমিটিকে ম্যানেজ করে ব্যাকডেটেও উপস্থিতির স্বাক্ষর করে থাকেন। তার এমন অনিয়মের বিষয়টি নিয়ে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিভাবকরা জানায়, সন্তানদের স্কুলে পাঠেই লেখাপড়া করানোর জন্য। কিন্তু শিক্ষিকার এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সন্তানরা স্কুলে যাওয়ার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। আর একজন প্রধান শিক্ষিকা হয়েও প্রকাশ্যে গাছের নিচে পাটি পেতে ঘুমিয়ে থাকা ও ছাত্রদের দিয়ে উকুন বাছানোর কাজটি অত্যন্ত লজ্জাজনক।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ফুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আনোয়ারা ইয়াসমিন জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক নয়। কেউ ইর্ষান্বিত হয়ে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে।

স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফয়সাল আহম্মেদ বেল্টু জানান, চলতি মাসেই নতুন কমিটির সভাপতি অন্তর্ভুক্ত হয়েছি। এখনো কোনো মিটিং করতে পারেনি। আর প্রধান শিক্ষিকা কর্তৃক ছাত্রদের সঙ্গে নানা অবহেলার বিষয়টি তিনিও অবগত হয়েছি। সোমবার বিদ্যালয়ে গিয়ে ঘটনার বিষয়ে মিটিং করে ব্যবস্থা নেব।

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিনা আক্তার বানু বলেন, একজন শিক্ষিকার এমন কর্মকাণ্ড মোটেও উচিত নয়। তিনি বিষয়টি শোনার পর রোববার তার অফিসের এক কর্মকর্তাকে ওই বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028548240661621