ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে(ইবি) এক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মারধরে মুখে ওই ছাত্রলীগ কর্মী দৌড়ে গিয়ে ইবি থানায় আশ্রয় নেন। গত শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সাদ্দাম হোসেন হলের ৩৩৩ নম্বর রুমে তাকে ঘিরে রাখেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক তাকে নিরাপদে বের করে দিতে চাইলে হল গেট পার হয়ে শিক্ষার্থীরা তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দিয়ে মারধর করে ধাওয়া দেয়।
মারধর খেয়ে থানায় আশ্রয় নেয়া ছাত্রলীগ কর্মীর নাম আবদুল হাফিজ। তিনি পরিসংখ্যান বিভাগের মাস্টার্স ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। জুলাইয়ের ছাত্রআন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়া, আওয়ামী সরকারের সময় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে চলাফেরা করা এবং হলের ডাইনিং সহ বিভিন্ন দোকানে বাকি খাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, বিভাগের রিটেক পরীক্ষায় অংশ নিতে ক্যাম্পাসে আসেন হাফিজ। বিকেলের দিকে হল গেটে নিষেধ করার পরও পাঁচ ছয়জনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি জোরপূর্বক হলে প্রবেশ করেন। বিষয়টি শিক্ষার্থীরা জানতে পারলে রুমের সামনে অবস্থান নিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। প্রায় এক ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক তাকে নিরাপদে বের করে দিতে চাইলে হল গেটে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হাফিজকে জুতার মালা পরিয়ে দেয়। শেষে মারধর করে ধাওয়া দিলে তিনি দৌড়ে থানায় গিয়ে আশ্রয় নেন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন, পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী, ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উপস্থিতিতে বাকি টাকা পরিশোধের প্রেক্ষিতে তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়া হবে মর্মে তার থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ কর্মী হাফিজ বলেন, পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ক্যাম্পাসে এসেছি। কিন্তু এরকম কিছু হবে ভাবিনি। তারা আমাকে অন্য হাফিজ (শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) ভেবেছিলো। যে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের মারধর করেছিলো। আমি সেই হাফিজ না। আমি ছাত্রলীগের সঙ্গেও জড়িত ছিলাম না। আন্দোলনের সময় কাউকে হুমকি দেইনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক ড. এয়াকুব আলী বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ফোন দিলে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। আগামী ৭ তারিখের মধ্যে তাকে বাকি টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে৷ টাকা পরিশোধ করলে তাকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হবে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামানের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।