নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলের একটি স্কুলের দেড় শ শিক্ষার্থীকে স্কুলে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আব্দুল খালেক হাজির লোকজনের বিরুদ্ধে। এতে শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
জানা গেছে, গজারিয়াকান্দি প্রাইমারি স্কুলের মোট শিক্ষার্থী ৩৭৫ জন। আগে স্কুলটির শিক্ষার্থীদের গড় উপস্থিতি আড়াই শর ওপরে থাকলেও বর্তমানে তা এক শর নিচে নেমে গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শ্রীনগর ইউপি মেম্বার আব্দুল খালেক হাজি ও সাবেক মেম্বার শাহ আলম গ্রুপের মধ্যে দুই দফায় টেঁটাযুদ্ধে উভয় পক্ষের দুজন প্রাণ হারান। গত ১৯ নভেম্বর সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার পর শাহ আলমের সমর্থকরা এলাকা ছেড়ে পাশের গ্রামে আশ্রয় নেয়। এরপর তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুট করে খালেক সমর্থকরা। এরপর বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় সেসব পরিবারের শিক্ষার্থীদের।
অভিযোগ উঠেছে, শাহ আলম সমর্থিত পরিবারের দেড় শ শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে যেতে বাধাসহ মারধরের হুমকি দিচ্ছে খালেক সমর্থিতরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টির পঞ্চম শ্রেণিতে ক্লাস করছে মাত্র ২১ শিক্ষার্থী। এর পাশের একটি কক্ষে দুুটি শ্রেণির (তৃতীয়-চতুর্থ) ২৫ জন শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে পাঠদান করা হচ্ছে। স্কুলটির দ্বিতীয় তলায় পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
গজারিয়াকান্দি প্রাইমারি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইকরাম জানান, স্কুলে যাওয়ার পর খালেক মেম্বারের লোকেরা তাড়িয়ে দিয়েছে। শ্রেণিকক্ষে ঢুকতে দেয়নি।
শাহ আলম সমর্থক ফুল নাহার জানান, তাঁর মেয়ে স্কুলে যেতে পারছে না। স্কুলে গেলে ধাওয়া করছে প্রতিপক্ষের লোকেরা।
তবে শ্রীনগর ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক হাজির ভাই জাহার আলী মুঠোফোনে বলেন, ‘স্কুলে যেতে শিক্ষার্থীদের কোনো প্রকার বাধা দেওয়া হয়নি। ’ বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটের বিষয়টিও অস্বীকার করেছেন তিনি।
গজারিয়াকান্দি প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক পলি আক্তার বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থী পরিবারের সঙ্গে এলাকা ছেড়ে পাশের গ্রামে বসবাস করছে। স্কুলটিতে উপস্থিতির হার অনেক কম। সামনে চূড়ান্ত মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশগ্রহণ না করলে পিছিয়ে পড়বে তারা। ’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) সত্যজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে বাধা দেওয়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’