শিক্ষার্থীর অজান্তে কলেজে ভর্তির আবেদন

গাজীপুর প্রতিনিধি |

আবেদনকারী শিক্ষার্থীর অজান্তে অনলাইনে কলেজে ভর্তির আবেদন দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও গাজীপুর সদরের ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির স্কুল শাখা থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অজান্তে প্রতিষ্ঠানের কলেজ শাখাকে পছন্দ তালিকায় প্রথমে রেখে ভর্তির আবেদন করে দিচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন শিক্ষা প্রশাসনের কাছে। 

ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আমি বা আমার পরিবারের কেউ অনলাইনে ভর্তির আবেদন বা টাকা জমা না দিলেও গত ৮ ডিসেম্বর আমার মোবাইল ফোনে মেসেজ এসেছে ভর্তির আবেদন হয়ে গেছে। ভর্তির আবেদন ফিয়ের ১৫০ টাকাও জমা হয়ে গেছে। ওই আবেদনে ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নামটি ফার্স্ট চয়েজসহ দূর-দূরান্তের অন্যান্য কলেজের নাম দেয়া হয়েছে। 

সাদিয়া আরও জানান, ঢাকা বোর্ডের অধীনে থাকা এ স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০২২সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছি। আমার রোল নম্বর ১২৬১২১। 

তিনি আরও বলেন, পরে পছন্দের কলেজে ভর্তির আবেদন করতে গেলেও তা রিসিভ হয়নি। আগের আবেদন বাতিল ও করতে পারছি না। স্কুলের প্রধান মো. সানোয়ার হোসেনের কাছে গেলে তিনি আমাকে বলেন, দুইটি বছরইতো। থাকো না এ প্রতিষ্ঠানেই। আমাদের ছাত্রী আমাদের এখানেই থাকুক। 

একই অভিযোগ করেন ওই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ আজিম হোসেন। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি এ প্রতিষ্ঠানের মানবিক শাখা থেকে জিপিএ ৩ দশমিক ০৬ নিয়ে পাস করেছি। আমার রোল নম্বর ৩১৫২৯১। আমি ওই প্রতিষ্ঠানের কলেজ শাখায় ভর্তির জন্য অনলাইনে কোন ফি দেইনি বা ভর্তির কোন আবেদন করিনি। আমার অনুমতি না নিয়ে ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম উল্লেখ করে আমার ভর্তির জন্য আবেদন করেছে তারা। এজন্য তিনি তার আবেদন বাতিল ও বিনা অনুমতিতে কেন তার আবেদন করা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানিয়ে আবেদন করেছি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে।


 
ওই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসিতে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হওয়া ছাত্র মাহফিল হোসেন একই অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আমার অভিভাবক এ বিষয়টি কেনো করা হয়েছে জানতে চাইলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে অশালীন কথা বলেন এবং তাকে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়।
 
এক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার (রোল নং ৫২২৩৯৯), মুসফিকুর রহমান (রোল নং ৫২২৪৬২), নুসরাত জাহান নাবিলা (রোল ৫২২৩৪৫), মহিন হায়দার (রোল নং- ৫২২৪৫৮), আশিক হোসেন  (রোল নং ৫২২৬৮৫), আজিম হোসেন (রোল নং-৩১৫২৯১), শারমিন আক্তার মিম  (রোল নং ২০৭১৩৬), ফাতেমা আক্তারসহ (রোল নং ১২৬১২৮) আরও অনেকে একই অভিযোগ করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
 
জানতে চাইলে ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রধান শিক্ষক মো. সানোয়ার হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে দাবি করেন, স্কুলের কেউ এসএসসি উত্তীর্ণ কোনো শিক্ষার্থীকে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করে দেয়নি। যেসব শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে আবেদন করে দেয়ার জন্য এসেছে শুধুমাত্র তাদেরকেই আমরা আবেদন করে সহযোগীতা করেছি। তবে, আমরা কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বুঝিয়ে অনরোধ করে আমাদের কলেজে আবেদন করার জন্য বলেছি। তবে সে সংখ্যা কতো তা জানিনা। 

জানতে চাইলে গাজীপুরের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষার্থীদের অজান্তে এভাবে কলেজে ভর্তির আবেদন করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তিনি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের জেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
  
একাদশে কেন্দ্রীয় ভর্তির ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, অনুমতি ছাড়া অপরের আবেদনপত্র পূরণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002892017364502