শিক্ষায় হোক নতুন সূর্যোদয়

অধ্যক্ষ মুজম্মিল আলী |

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে নতুন একটি বছর শুরু হলো। অনেক হাসি-খুশি, আনন্দ-বেদনা আর সাফল্য- ব্যর্থতার ভেতর দিয়ে আমাদের জীবন থেকে একেকটি বছর চলে যায়। স্বপ্ন আর প্রত্যাশার ঝুড়ি নিয়ে আরেকটি নতুন বছর আসে। মানুষ বিগত বছরের ব্যর্থতা ও গ্লানি ভুলে আশা আকাঙ্ক্ষায় নতুন বছরে নতুন করে জীবন শুরু করে। এভাবেই মানুষের জীবন ক্রমশ সামনের দিকে এগিয়ে যায়। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে আমরা করোনা মহামারিকে অনেকটা জয় করতে পেরেছি। ২০২০ ও ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ-পুরো দুটি বছর করোনার থাবায় ক্ষত-বিক্ষত হয়েছি। করোনা ঝিমিয়ে পড়লেও এর ধকল আমরা এখনো সয়ে চলেছি। বিশেষ করে শিক্ষায় এর ক্ষয়ক্ষতি কোনদিন আমরা ষোল আনা পুষিয়ে উঠতে পারবো, তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ জানে না। তদুপরি, নতুন বছরে শিক্ষার ঘাটতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবো, সেই প্রত্যাশা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলের।

কেবল আশা আর প্রত্যাশায় কাজ হয় না। এর জন্য কার্যকর কর্মসূচি প্রয়োজন। কিন্তু, আমাদের দেশে সবক্ষেত্রে বিশেষ করে শিক্ষায় দায়সারা কর্মসূচি কোনো সুফল বয়ে আনতে পারে না। আমাদের শিক্ষার দৈন্য দশা অনেক। এক সময় পরীক্ষায় নকলের দুর্নাম ছিলো। সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালু হবার পর নকলের দুর্নাম থেকে জাতি কিছুটা মুক্ত হতে পেরেছে। এখন নোট-গাইড, কোচিং বাণিজ্য, পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস এবং সর্বোপরি আমাদের লেখাপড়ার মান নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। নতুন বছরে আমাদের শিক্ষায় নতুন কারিকুলাম শুরু হতে যাচ্ছে। এই কারিকুলাম কতটুকু বাস্তবায়ন হয়, সেটি এখন দেখার বিষয়। এর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষায় একটি নতুন সূর্যোদয়ের আশায় সকলকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে শিক্ষা সংক্রান্ত সাম্প্রতিক দুটি বিষয়ে সামান্য আলোকপাত করতে চাই।

প্রথমত, শিক্ষামন্ত্রণালয় বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার জন্য ‘ম্যানেজিং কমিটি ও গভনিং বডি প্রবিধানমালা-২০২২’ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে বলে গত সপ্তাহে দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তার পৃথক দুটি সম্পূরক প্রতিবেদন থেকে জানতে পেরেছি। এটি একটি সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ বটে। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রণীত বিধিবিধানের আলোকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কমিটি গঠিত ও পরিচালিত হয়ে আসছে। দীর্ঘদিন পর এই নীতিমালার অনেক ধারা ও উপধারার কার্যকারিতা এখন তেমন একটা নেই বললে চলে। সময়ের  প্রয়োজনে নতুন ধারা ও উপধারা সংযোজন কিংবা কোনো কোনো ধারা ও উপধারার আংশিক পরিবর্তন আবশ্যক হয়ে উঠেছে। এসব কারণে দীর্ঘ সময় চলমান না রেখে প্রতি তিন কিংবা পাঁচ বছর পর পর এসব বিধি বিধান নতুন করে সংশোধন, পরিবর্তন, বিয়োজন কিংবা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া দরকার। ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডি প্রবিধানমালা-২০২২ প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে মূল আলোচনায় আসতে চাই।

নতুন প্রবিধানে ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডির সভাপতি পদে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে মতামত জানতে চেয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয় ঢাকা শিক্ষাবোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি প্রেরণ করেছে বলে জানা গেছে। মন্ত্রণালয়ের এরকম একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রাক্কালে সত্যি অনেকের ন্যায় আমিও বিস্মিত হয়েছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে সব সময় ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডি উঠিয়ে দেওয়ার পক্ষে।

বর্তমান সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এদের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমার মনে হয় না। একটা সময় প্রয়োজনীয়তা ছিলো বটে। নব প্রতিষ্ঠিত কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এখনও পাঁচ-দশ বছর কমিটি রাখা যেতে পারে। কিন্তু এমপিওভুক্তির পর এর প্রয়োজনীয়তা আর থাকে না। বরং বিভিন্ন সময় নানা ক্ষেত্রে কমিটি শিক্ষা, শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে থাকে। একজন যোগ্য প্রধান শিক্ষক কিংবা অধ্যক্ষ এবং তাঁর সহকর্মীরা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য যথেষ্ট। তাঁরাই প্রতিষ্ঠান পরিচালনার মূল চালিকাশক্তি। এখানে অল্প শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিত ও ব-কলম ম্যানেজিং কমিটি কিংবা গভর্নিং বডির কী দরকার আছে? এদের কারণে অনেক জায়গায় লেখাপড়ার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়, এমনকি নষ্ট হয়ে থাকে। সরকারি স্কুল-কলেজের ন্যায় বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজে নামমাত্র একটি নির্বাহী কমিটি রাখলেই চলে। 

যাই হোক, কমিটির প্রয়োজনীয়তা কিংবা অপ্রয়োজনীয়তার বিষয়টি আজ আমার লেখালেখির মূল উদ্দেশ্য নয়। প্রবিধানমালা-২০২২ এ কমিটির সভাপতি পদে সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে মন্ত্রণালয় শিক্ষাবোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতামত জানতে যে চিঠি প্রেরণ করেছে, সে বিষয়ে আলোকপাত করা আমার প্রকৃত উদ্দেশ্য।

কোনো উদ্দেশ্যে মন্ত্রণালয় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটিতে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি পদে মনোনয়ন দিতে চায়, সেটি আমার বোধগম্য হয়নি। আমার মনে হয়, এর পেছনে কর্তাদের অন্য কোনো কুমতলব আছে। খুব সম্ভব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তহবিলের ওপর এদের দৃষ্টি পড়েছে। আমরা দীর্ঘদিন থেকে কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণের বিষয়ে কথা বলে আসছি। সেটি করতে পারলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় রাজনীতি ও অশিক্ষিতদের বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে পারতো। কিন্তু তা না করে হঠাৎ সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি পদটি দখলের খায়েশ মনের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাদের কমিটির সভাপতি বিএ পাস হতে হয়। এ ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি কিংবা অন্য কোনো পদে আসার সুযোগ রাখা হয়নি। অভিভাবকদের মধ্য থেকে বিএ পাস একজনকে সভাপতি নির্বাচিত করতে হয়। একজন শিক্ষিত মানুষ শিক্ষা ও শিক্ষকের মর্যাদা যতটুকু বুঝতে পারেন, অশিক্ষিতরা ঠিক ততটুকু পারেন না। 

তাই, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেওয়ার বিষয়টি প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তহবিলের বালাই নেই। তাই সেখানে আমলাদের নজর পড়েনি। বেসরকারি স্কুল-কলেজে লাখ লাখ টাকার তহবিল। এর সঙ্গে কারো কোটি টাকার সম্পদ। সভাপতির একচেটিয়া ক্ষমতা। ইচ্ছে হলে লুটেপুটে খাবার অবারিত সুযোগ। অনেক জায়গায় অসাধু, ব্যক্তিত্ত্বহীন ও দুর্বল প্রতিষ্ঠান প্রধানকে হাত করে সভাপতি বছরে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেন বলে শোনা যায়। সভাপতি সরকারি কর্মকর্তা হলে কোনো কথা নেই। একেবারে সাত খুন মাফ। যাচ্ছে তাই করা যাবে। স্কুল-কলেজের কমিটিতে একজন শিক্ষাবিদ যিনি স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হবেন, তাকে সভাপতি পদে মনোনয়ন দেয়া যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি। একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কিংবা প্রধান শিক্ষককেও এ পদে আনা যেতে পারে। 
শিক্ষায় গবেষণা কিংবা বিশেষ কোনো অবদান আছে, এমন লোককেও কমিটির প্রধান করা যায়। একজন জেলা প্রশাসক অথবা টিএনও কিংবা এই জাতীয় কেউ কমিটির সভাপতি হলে তার পক্ষে বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও তদারকিতে অংশগ্রহণ কঠিন হয়ে পড়ে। তারা নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলে একটা মিটিংয়ের তারিখ পর্যন্ত অনেক সময় দিতে পারেন না। তারিখ দিয়েও কোনো কোনো সময় মিটিংয়ে উপস্থিত থাকার সুযোগ হয় না। সশরীরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মিটিং করার সময় তাদের মেলে না। বেশ কয়েক বছর আগে আমার প্রতিষ্ঠানে একবার অ্যাডহক কমিটি চলমান ছিলো। সে সময় সারা দেশের অ্যাডহক কমিটিগুলোতে পদাধিকারে জেলা প্রশাসক ও টিএনওরা সভাপতি ছিলেন। আমি দেখেছি, জেলা প্রশাসক ও টিএনও সাহেবদের প্রতিদিন এই-সেই নানা মিটিং থাকে। নানা কাজ থাকে। শত ব্যস্ততা থাকে। তাই মিটিংয়ের একটা তারিখ দিতে হিমশিম খান। অনেক সময় তারিখ দিয়েও মিটিং করতে পারেন না।

আরেকটি বিষয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি জেলা কিংবা উপজেলা সদরে অবস্থিত না হলে তারা তাদের নিজ অফিসেই মিটিং বসাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কদাচিৎ যেতে চান। তাই প্রতিষ্ঠানকে প্রধান সব সদস্যকে নিয়ে জেলা কিংবা উপজেলা সদরে যেতে হয়। মফঃস্বলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এটি আরেক বাড়তি বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে থাকে।

আরেকটু অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। আমার পরিচিত অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যাদের কমিটি সংক্রান্ত মামলা-মোকদ্দমার কারণে জেলা প্রশাসক বা টিএনও দীর্ঘদিন থেকে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকের কাছে বিভিন্ন সময় নানা কথা শুনে থাকি। তাঁদের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বিলে সময়মতো সভাপতির স্বাক্ষর মেলে না। আমলাতান্ত্রিক কায়দায় বিলের ফাইল জমা দিয়ে ফেরত পেতে অনেক সময় সপ্তাহ দিন লেগে যায়। প্রাতিষ্ঠানিক বেতন বিল পাস করিয়ে নিতে দশ-বারো দিন লাগে। এর মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের অনেক কষ্ট পোহাতে হয়। সবকিছুতে দীর্ঘসূত্রিতা থাকে। থাকে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য। কোথাও কোথাও সভাপতিকে পৃথক নজরানা দিতে হয়। এখন যদি বাধ্যতামূলকভাবে সরকারি কর্মকর্তারা সভাপতির পদে জুড়ে বসেন, তাহলে শিক্ষক-কর্মচারী তথা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দূর্ভোগ বাড়বে বৈ কমবে না। সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এই কঠিন দুর্গতিতে পড়ুন, সেটি আমাদের কাম্য নয়। 

সংবাদটি প্রকাশ হবার পর কেউ কেউ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। অনেক শিক্ষক-কর্মচারীও আনন্দিত হয়েছেন। তারা ভাবছেন, এর ফলে স্কুল-কলেজ সরকারি হওয়ার পথ প্রশস্ত হবে। প্রকৃতপক্ষে তাদের এ ধারণাটি মোটেও সঠিক নয়। আমি মনে করি, এটি স্কুল-কলেজ জাতীয়করণের পথে আরেকটি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অপপ্রয়াস ছাড়া অন্য কিছু নয়। যাই হোক, এবার দ্বিতীয় বিষয়টি আলোচনা করতে চাই। গত কয়েকদিন আগে দৈনিক শিক্ষাডটকমে একটি প্রতিবেদন দেখলাম। এতে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিল বৃদ্ধির জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ (একশত) টাকা করে চাঁদা আদায় করার কথা বলা হয়েছে। এই সংবাদটি আমাকে পীড়িত ও বিস্মিত করেছে। এতে শিক্ষক সমাজের মর্যাদা অনেকটা অবনমিত করা হয়েছে। জাতি গঠনের মহান কারিগরদের কর্মজীবন শেষে  পড়ন্ত বেলায় কিছু টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরোক্ষভাবে গ্রহণ করতে হবে, সেটি ভাবতে কেনো জানি আমার লজ্জাবোধ জাগ্রত হয়। বেসরকারি শিক্ষকরা যেটি বেতন পান, সেটিকে ‘অনুদান’ বলে তাঁদের একদিকে যেমন খাটো করা হয়, তেমনি চাঁদার টাকা থেকে অবসর ও কল্যাণের তহবিল বৃদ্ধি করার বিষয়টি নিঃসন্দেহে শিক্ষকদের ছোট করার শামিল। এই বিষয়টির পক্ষে-বিপক্ষে নানা কথা থাকতেই পারে। কিন্তু, এতে শিক্ষকদের খাটো প্রতিপন্ন করার একটি হীন মানসিকতা ফুটে উঠেছে বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। আমি এর ঘোর প্রতিবাদ জানাই। একটা সময় আমরা হয়তো তলাবিহীন ঝুড়ি ছিলাম। এরপরও সে সময় আমাদের জাতির জনক প্রাথমিক শিক্ষাস্তর জাতীয়করণ করে হাজার হাজার শিক্ষকের জীবনমান উন্নত করতে কারো কাছে সাহায্য কিংবা চাঁদার জন্য হাত পাতেননি। শিক্ষকদের অবসরকালীন সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করেছিলেন। তাঁদের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে একজন শিক্ষাবিদকে শিক্ষাসচিব নিয়োগ করেছিলেন।

আজ শিক্ষকদের নানাভাবে খাটো করার রাষ্ট্রীয় প্রয়াস দেখে মনে সত্যি কষ্ট লাগে। কেনো শিক্ষকদের অবসর সময়ের কিছু টাকার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে হাত পাততে হবে? ভিক্ষা করে তাঁদের অবসর ও কল্যাণের টাকা যোগাড় করতে হবে? অন্য কোনো পেশার লোকজনদের অবসরকালীন সময়ের টাকার কোথাও থেকে চেয়ে আনতে হয় কী-না, জানতে ইচ্ছে হয়?  অন্যদের বেলায় টাকার ঘাটতি না হলে শিক্ষকদের ক্ষেত্রে সংকট কেনো? আমাদের সরকার নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করেছে। লন্ডন শহরের মতো ঢাকায় মেট্রো রেল চালু করেছে। ২০৪১ খ্রিষ্টাব্দের আগে একটি উন্নত দেশে উন্নীত হবার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষক সমাজকে নিয়েও সরকারকে নতুন করে ভাবতে হবে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে নয়, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে টাকা দিয়ে শিক্ষকদের অবসর ও কল্যাণের সব পাওনা স্বল্প সময়ের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি নেয়া হোক। আমাদের শিক্ষা বিশ্বমানে উন্নীত হোক। সবার উপরে শিক্ষক সমাজের মান মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হোক। নতুন বছরের শুরুতে এই আমার একান্ত প্রত্যাশা।

লেখক :  অধ্যক্ষ মুজম্মিল আলী, আবাসিক সম্পাদক (লন্ডন), দৈনিক শিক্ষাডটকম 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026168823242188