বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সহকারী শিক্ষিকাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে অপর এক শিক্ষিকার ছবি তোলায় তাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষিকা। গত বুধবার বরিশালের হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৮০ নং চরপত্তনী ভাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা শিক্ষা অফিস। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
তবে সহকারী শিক্ষিকাকে মারধরের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি দাবি করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষিকা মানসিকভাবে অসুস্থ।
ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষিকা সালমা বেগম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, এক বছর আগে প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হয়ে তাকে সতর্ক করলে তিনি আমাকে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন শুরু করেন। এজন্য আমি ওই স্কুল থেকে ডেপুটেশনে অন্য স্কুলে বদলি হয়ে যাই।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিন আগে ডেপুটেশন বাতিল হওয়ায় আমার নিজ স্কুলে আমায় ফিরে আসতে হয়েছে। তখন থেকেই প্রধান শিক্ষক আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করেন। ঘটনার দিন গত ১ ফেব্রুয়ারি আমি নাকি তার ছবি তুলেছি এমন অপবাদ দিয়ে প্রধান শিক্ষক আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। আমি তাকে বাধা দিতেই তিনি আমাকে টানাহেচড়া এবং মারধর করেন। নিজেকে রক্ষা করতে ৯৯৯ নম্বরে কল করে সহযোগিতা চাইলে থানা পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। এমনকি খবর পেয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি আমি লাইব্রেরিতে থাকার সময় সহকারী শিক্ষিকা সালমা বেগম তার মুঠোফোনে আমি ও আরেকজন সহকারী শিক্ষিকার ছবি তোলেন। বিষয়টি টের পেয়ে আমি প্রতিবাদ করি এবং তাকে ছবি তুলতে নিষেধ করি। কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করায় আমি তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। কিন্তু আমি তাকে মারধর করিনি। তাছাড়া ওই সহকারী শিক্ষিকার মানসিক সমস্যা আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রত্যক্ষদর্শী তোতা মিয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রধান শিক্ষক খামখেয়ালীভাবে স্কুল পরিচালনা করছেন। তিনি নিজে ঠিকভাবে স্কুলে আসেন না এবং ক্লাস করান না।
হিজলা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল গাফফার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, খবর পেয়ে আমি নিজেই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। ভুক্তভোগী এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। এই ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।