পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বাসন্তী মন্ডল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিশু শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ওই শিশুর পরিবারের অভিযোগ, ওই ছাত্রীকে দিয়ে ক্লাসরুম ও বাথরুম ঝাড়ু দেয়ানোর বিষয়েটি বাসায় জানিয়েছিলো সে। তাই স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা আরতী রানী ও বিউটি রানী ওই শিক্ষার্থীকে ডাস্টার দিয়ে মারধর ও ঘুষি মেরে তাকে আহত করেছেন। এ অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তা। যদিও ওই দুই শিক্ষিকা অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, সোমবার সকালে বিদ্যালয়ে যায় প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসনিয়া আক্তার ফাতেমা। এর কিছুক্ষণ পরই কাঁদতে কাঁদতে বাসায় চলে আসে সে। তাকে বাসায় নিয়ে আসে স্কুলের দুই শিক্ষার্থী। কাঁদতে কাঁদতে ফাতেমা বাবা-মাকে বলে তাদের কাছে ক্লাসরুম ও বাথরুম ঝাড়ু দেয়ার বিষয়টি জানানোয় শিক্ষিকা আরতী রানী ও বিউটি রানী প্রথমে তার মুখে ঘুষি মারেন। এরপর ডাস্টার দিয়ে তাকে মারধর করা হয়। ফাতেমা কাঁদতে শুরু করলে ওই দুই শিক্ষিকা তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেয় স্কুলের অন্য দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে।
আর আহত ছাত্রীর মা হালিমা বেগম ও বাবা আব্দুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গত ১৭ জুলাই ফাতেমাকে দিয়ে বাথরুম ও ক্লাসরুম ঝাড়ু দেয়ান শিক্ষকরা। মেয়ে বাসায় নালিশ করলে ক্ষুব্ধ হয়ে সোমবার ফাতেমাকে মারধর করা হয়েছে। তারা বিষয়টি কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
তবে শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়টা অস্বীকার করেছেন দুই শিক্ষিকা। শিক্ষিকা আরতি রানী ও বিউটি রানী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সোমবার এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। কেনো ফাতেমা বাবা-মাকে মারধরের কথা বলেছে তা তারা জানেন না। তারা কখনো শিক্ষার্থীদের দিয়ে ক্লাসরুম ঝাড়ু দেয়াননি বলে জানান দুই শিক্ষিকা।
প্রধান শিক্ষক বিমল চন্দ্র রক্ষিত দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কোনো শিক্ষার্থীকে দিয়ে ক্লাসরুম ঝাড়ু দেয়ানো হয় না। শিক্ষকরাই সপ্তাহে একদিন স্কুল পরিষ্কার করেন। এ বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কোনো মারধর করা হয় না।
এদিকে স্কুলে তদন্ত এসে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। এসময় বিদ্যালয় পরিদর্শন ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অভিযোগ শুনেন তারা।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অচ্যুতা নন্দ দাস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দুই শিক্ষিকাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীর বাবা-মায়ের অভিযোগ পেয়েই তাৎক্ষণিক স্কুল পরিদর্শনে এসে কিছু অনিয়ম পেয়েছেন। শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।