পাঠ্যবই মুদ্রণের সব দরপত্র (২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ) বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে পাঠ্যবই ছাপাতে শীট মেশিন সম্বলিত মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সহজ শর্তে স্বতন্ত্র প্যাকেজে ছোট ও মাঝারি আকারে লট সংখ্যা সুনির্দিষ্ট করে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ দুর্নীতিবাজ সব কর্মকর্তার শাস্তি ও নিম্নমানের বই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করার জোর দাবি তুলেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে এনসিটিবি অফিসের সামনে তারা মানবন্ধন করে এসব দাবি জানান। পরে দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দেন এনসিটিবির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর। সেখানকার দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গেও নিজদের দাবির বিষয়ে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মুদ্রণশিল্প সমিতির সাবেক চেয়ারম্যান তোফায়েল খান। সভাপতিত্ব করেন বৈষম্যবিরোধী মুদ্রণ ব্যবসায়ীদের আহবায়ক ডা. দিদারুল আলম। সঞ্চালনা করেন মো. মোর্শেদ আজম।
পাঠ্যবই ছাপাতে ইউনিসেফ নির্দেশিত মানসম্পন্ন পরিদর্শন প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়ার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করে কারিকুলাম সংশোধন সাপেক্ষে ব্যাপক সংখ্যক ছাপাখানার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এনসিটিবি‘র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি হবে। বিগত বছরগুলোতে নিম্নমানের বই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে ও তাদেরকে স্থায়ীভাবে কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে।
তারা যাদের নামে শাস্তির সুপারিশ করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন- এনসিটিবির সাবেক চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন, বর্তমান সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) সাইদুর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, গত কয়েক বছর ধরে একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র এনসিটিবির কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে নিম্নমানের বই সরবরাহ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা এবং সরকারি অর্থের অপচয় ও লুটতরাজ করেছেন। ওই চক্রটি সিন্ডিকেট তৈরি করে কঠিন শর্তারোপ করে শীট মেশিন সম্বলিত মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানসহ ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অসহ প্রতিযোগিতায় ঠেলে দিয়ে মুদ্রণ কাজের বাইরে সরিয়ে রেখেছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার কর্মী ও তাদের পরিবার মানবেতর জীববযাপন করছে। তাদের কথা বিবেচনা করে সহজ শর্তে ফের দরপত্র আহ্বান করা হোক।