শীত বাড়বে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক: উত্তুরে শিরশিরে ঠান্ডা হাওয়ার দাপটের সঙ্গে দ্রুত নামছে হিমাঙ্কের পারদ। গতকাল বৃহস্পতিবার উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ক্রমশঃ দেশের পূর্বদিকে অগ্রসর হচ্ছে এই শৈত্যপ্রবাহ। এখন ধীরে ধীরে প্রায় সারাদেশে  প্রচন্ড শীত জেঁকে বসবে। আগামী ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক সপ্তাহ ধরে চলবে এই শীতের দাপট। অতঃপর তীব্র শীতের তরঙ্গ দেশের বেশীরভাগ অঞ্চল অতিক্রম করে ভারতের আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা রাজ্যের ওপর দিয়ে বাংলাদেশ হতে প্রস্থান করবে।

বছরের প্রথম পর্বের এই শৈত্য প্রবাহে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে বলে আবহাওয়া বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন। কিছুদিন পর আবারো আরেকটি শৈত্যপ্রবাহ প্রবেশ করতে পারে দেশে। এদিকে গত এক সপ্তাহ যাবত চলমান ঘন কুয়াশা গতকাল রাতে অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। সিলেট বিভাগের ২টি জেলায় আরো ১-২ দিন ঘন কুয়াশা বিরাজ করতে পারে।

শৈত্যপ্রবাহ প্রবেশের পর গতকাল সকাল ৬টায় দেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায় তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৩,দিনাজপুরে ১০ দশমিক ৬ এবং চূয়াডাঙ্গায় ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। যা চলতি বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এছাড়া অন্তত ১০ টি জেলায় তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রিতে নেমে আসে।রাজধানী ঢাকায় ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি।

গতকাল সকালে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা বুধবারে ছিল ১৬.৫ ডিগ্রি। শীত কবলিত অঞ্চলগুলোতে প্রচণ্ড শীতে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। কুয়াশা ও ঠাণ্ডার কারণে কাজে বের হতে পারছেন না তারা। হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, ডায়েরিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, উত্তরাঞ্চল, পশ্চিমাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি জেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাবে। আস্তে আস্তে এটি আরও কিছু এলাকায় বিস্তার করতে পারে। তিনি বলেন, পরে আস্তে আস্তে তা আরও কিছু এলাকায় বিস্তার করতে পারে। মূলত সেসব অঞ্চলে আজ তাপমাত্রা ১১-১২ ডিগ্রি ছিল, তা কমে ১০ এর নিচে নামতে পারে। একই সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রা গড়ে দুই থেকে এক ডিগ্রি কমে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছে।

মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। পাশাপাশি মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। বাংলাদেশের পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, সিলেট বিভাগের ২টি জেলায় অবশ্য আরো ১-২ দিন ঘন কুয়াশা বিরাজ করতে পারে। কুয়াশা প্রবেশ করেছিল রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে এবং বিদায় নিচ্ছে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ হয়ে। তিনি জানান,গতকাল সকালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ চিত্রে দৃষ্ট হয় যে, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী এলাকার পাহাড়ের মধ্যবর্তী সমতল অঞ্চলে। এছাড়া বাংলাদেশের আর কোন জেলার ওপরে ঘন কুয়াশার আবরন অবলোকন করা যায়নি। যে কয়টি জেলার ওপর সামান্য কুয়াশার প্রলেপ দেখা যাচ্ছে তা আজ শুক্রবার আরো হ্রাস পাবে। আজ সকাল ১০ টার মধ্যে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২টি জেলার ওপরে হালকা কুয়াশা থাকতে পারে। এছাড়া ভারতের দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর ও জলপাইগুড়ি জেলা থেকে নতুন করে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা বিস্তার করতে পারে।

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, গতকাল রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে দেশের অভ্যান্তরীণভাগে মৃদু শৈত্য প্রবাহ প্রবেশ শুরু করেছে। সম্ভাব্য এই শৈত্য প্রবাহ প্রতিদিন অল্প অল্প করে  দেশের পূর্বদিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।শৈত্য প্রবাহ আগামী বুধবার ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন বিভাগ অতিক্রম করে ভারতের আসাম,মেঘালয় ও ত্রিপুরা রাজ্যের ওপর দিয়ে বাংলাদেশ অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে।এই শৈত্য প্রবাহ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে: খুলনা বিভাগের চূয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুস্টিয়া, রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার উপর।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা - dainik shiksha শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি - dainik shiksha দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস - dainik shiksha ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033440589904785