রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) প্রতি সেমিস্টারে উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় বৃত্তির টাকা। কিন্তু লেভেল-১ সেমিস্টার-২ এর কৃষি অনুষদের ফলাফল ছয় মাস আগে প্রকাশিত হলেও এখনো টাকা পাননি উত্তীর্ণ ২৯৮ শিক্ষার্থী। এরই মধ্যে আরও দুই সেমিস্টারের শেষ করেছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি দপ্তরে চলে ধীর গতির কাজ। অর্থ সংক্রান্ত হলে আরও বাড়ে ভোগান্তি। এসবের ফলে সঠিক সময়ে বৃত্তি, কোনো বিষয়ের অনুমোদন, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের অর্থসংক্রান্ত ফাইলসহ বিভিন্ন কাজে ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের।
উত্তীর্ণ হওয়া এক শিক্ষার্থী লোকমান হাকিম বলেন, ‘আমাদের লেভেল-১ সেমিস্টার-২ এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে জুন মাসে। এখন লেভেল-২ সেমিস্টার-২ এর পরীক্ষা চলছে এবং এরই মধ্যে লেভেল-২ সেমিস্টার-১ এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। অথচ এখনো আমরা লেভেল-১ সেমিস্টার-২ এর বৃত্তির টাকা পাইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন (২০০১) থেকে বৃত্তির টাকা সেমিস্টার প্রতি ১২০০ আছে। বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল এবং একাডেমিক খরচ বাড়লেও বাড়েনি বৃত্তির টাকা। তবুও সামান্য এ টাকা দিতে প্রশাসনের নানান টালবাহানা।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, লেভেল-১ সেমিস্টার-২ এর বৃত্তির ফাইল বিভিন্ন দপ্তরে অনুমোদিত হয়ে একাডেমিক অ্যান্ড স্কলারশিপ দপ্তরে আসে। এরপর ওই দপ্তর চলতি বছরের ১২ সেপ্টেম্বর অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড ফিন্যান্স দপ্তরে অনুমোদনের জন্য পাঠায়। এখান থেকে অনুমোদিত হয়ে ফাইলটি পরবর্তী দপ্তরে যাবে। তবে অনেক খুঁজেও বৃত্তির ফাইলটি বের করতে পারেননি অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড ফিন্যান্স দপ্তরের সহকারী পরিচালক নাহিদা পারভীন।
একাডেমিক অ্যান্ড স্কলারশিপ শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ হরি কমল দাশ বলেন, ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর কবে নাগাদ বৃত্তির টাকা শিক্ষার্থীরা পাবে এর কোনো নির্ধারিত সময় নেই। ফলাফল আমাদের কাছে আসার পরই কাজ শুরু হয়। আমরা প্রথমে ম্যানুয়ালি বৃত্তি প্রাপ্তদের তালিকা করি। এরপর ক্রমান্বয়ে রেজিস্ট্রার, ডিন ও উপাচার্যের কাছে অনুমোদিত হয়ে আমাদের কাছে আবার আসে। আমরা সেটিকে অর্ডার হিসেবে ফিন্যান্স অ্যান্ড একাউন্টস দপ্তরে পাঠাই। তারা বিল তৈরি করে এবং সর্বশেষে হল প্রভোস্ট বৃত্তির টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে হল ভিত্তিক শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেন। এতগুলো দপ্তর ঘুরে শিক্ষার্থীদের হাতে টাকা যেতে বেশ সময় লেগে যায়।
তিনি আরও বলেন, অল্প সময়ে বৃত্তির টাকা শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানোর বিষয়ে সবকিছু ডিজিটাল ও সফটওয়্যার ভিত্তিক করার জন্য ওপর মহলে প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু এখনো অনুমোদন পাইনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম বলেন, বৃত্তির ফাইল আটকা আছে এটি আমার জানা ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পেতে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত থাকা উচিত। আমি এটি নিয়ে দ্রুত কাজ করবো। আশা করি পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা দ্রুত তাদের বৃত্তির টাকা পাবে।